ভারতের প্রতিনিধি দলকে নেতৃত্ব দিয়ে ট্রাম্পের দেশে সদ্য পা রেখেছেন শশী থারুপ। সেখানে পহেলগাঁও হানা ও তার পরবর্তীতে পাকিস্তানের বুকে ভারতের সংহার রূপ ‘অপারেশন সিঁদুর’র সাফল্য নিয়ে বক্তব্য রাখে ভারতের সর্বদলীয় এই প্রতিনিধি দল। ট্রাম্পের দেশের তাবড় শহর নিউ ইয়র্কে পা রেখেই শশী তাঁর বক্তব্যে মনে করিয়ে দেন ৯/১১ সন্ত্রাসী হামলার বীভৎসতার কথা। যে হানার ‘ক্ষত’ আজও বুকে নিয়ে বেড়াচ্ছে আমেরিকা। আর সেখান থেকেই কার্যত সন্ত্রাস হামলা নিয়ে পাকিস্তানের মুখোশ খুলে ছাড়লেন শশী থারুর।
ট্রাম্পের দেশ আমেরিকার বুক থেকে শশী থারুরের সাফ বার্তা ছিল,’আমরা এই সাম্প্রতিক নৃশংসতা (পহেলগাম সন্ত্রাসী হামলা) যারা করেছে তাদের খুঁজে বের করার জন্য আমাদের অভিযান থামাবো না।’ এরই সঙ্গে তিনি বলেন,’ আমাদের ভাবা দরকার যে এই লোকেরা (সন্ত্রাসী) কোথায় অবস্থান করছে, কোথায় তাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল রয়েছে, কোথায় তাদের প্রশিক্ষণ, সজ্জিত, অর্থায়ন এবং এই ভয়াবহ ঘটনা ঘটানোর জন্য নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।’
উল্লেখ্য, ২০০১ সালে নারকীয় সন্ত্রাসী হানার শিকার হয়েছিল আমেরিকার নিউ ইয়র্ক। দিনটি ছিল ৯/১১। ঘটনার কেন্দ্রে ছিল জঙ্গি সংগঠন আল কায়দা। যে সংগঠনের প্রধান ছিল ওসামা বিন লাদেন। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, শেষবেলায় পাকিস্তানে গা ঢাকা দেওয়া ওসামাকে সেখানেই নিকেশ করে বারাক ওবামার আমেরিকা। সেই নিউ ইয়র্কে দাঁড়িয়ে শশী থারুর বলেন,’ স্পষ্টতই এটি আমাদের জন্য খুবই মর্মস্পর্শী মুহূর্ত, এর একটি শক্তিশালী বার্তাও রয়েছে.. আমাদের দেশে সদ্য হওয়া হামলার (সন্ত্রাসী) প্রেক্ষিতে… যে আমরা এখানে এমন একটি শহরে আছি যেখানে এখনও বর্বর সন্ত্রাসী হামলার ক্ষত বয়ে চলেছে।’

এরই সঙ্গে সন্ত্রাস নিয়ে কেন পাকিস্তানের দাবি মতো, যৌথ তদন্তের পথে ভারত যায়নি, তা মার্কিন মাটিতে ব্যাখ্যা করেন শশী থারুর। এই কংগ্রেস নেতা বলেন,’ ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে, ভারতীয় বিমান ঘাঁটিতে হামলা হয়েছিল, এবং আমাদের প্রধানমন্ত্রী আগের মাসেই পাকিস্তান সফর করেছিলেন… তাই যখন এটি ঘটেছিল, তখন তিনি এতটাই অবাক হয়েছিলেন যে তিনি আসলে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করে বলেছিলেন, আপনি তদন্তে যোগ দিচ্ছেন না কেন?”
এরই সঙ্গে শশী থারুর বলেন,’ভারতীয় সামরিক প্রতিষ্ঠানের ঝুঁকির জায়গা কল্পনা করুন এবার…. এই ধারণা নিয়ে যে পাকিস্তানি তদন্তকারীরা ভারতীয় বিমান বন্দরে আসবে।কিন্তু তারা এসে পাকিস্তানে ফিরে যায় এবং বলে, সমস্ত ভারতীয়রা নিজেরাই এটা করেছে…। ২০১৫ ছিল তাদের জন্য শেষ সুযোগ, তারা সন্ত্রাস বন্ধ করার ব্যাপারে কতটা আন্তরিক তা দেখানোর, সহযোগিতা করার, যেমনটি তারা প্রতিবার দাবি করে।’ এই জোরালো বার্তা আমেরিকার বুক থেকে দেন শশী।’
শশী থারুর বলেন, ক্রমাগত পাকিস্তান জঙ্গিদের ‘সেফ হেভেন’ হয়ে উঠছে। শশী বলেন,’আমরা (ভারত) অনেক চেষ্টা করেছি, আন্তর্জাতিক ডসিয়ার, অভিযোগ… পাকিস্তান নাকচের মনোভাবেই ছিল।’ সেই জায়গা থেকেই পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটিতে নির্দিষ্ট করে ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালিয়েছে বলে জানান শশী থারুর।