দুই বছর ধরে ইসরাইলি অত্যাধুনিক অস্ত্র মোকাবিলা করে এখনও টিকে আছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সামরিক ও রাজনৈতিক সীমাবদ্ধতায় অনেকটা দুর্বলও হয়ে পড়েছে সংগঠনটি। শীর্ষ অনেক নেতাকে হারালেও, উপত্যকার বাইরে বসে গেরিলা কৌশল চালাচ্ছে হামাস।
ইসরাইলের সঙ্গে দুই বছরের যুদ্ধ হামাসকে ব্যাপক ক্ষতির মুখে ফেলেছে। তাদের সামরিক সক্ষমতায়ও বেশ প্রভাব পড়েছে। তবুও সংগঠনটির অস্তিত্ব এখনও টিকে আছে এবং গাজার দুর্ভাগ্য ও অনিশ্চয়তা কাটতে এখনও অনেক পথ বাকি আছে বলেই মনে করেন মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
ইসরাইলের বিমান হামলায় হামাসের শীর্ষ নেতৃত্ব ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নিহত হয়েছেন ইসমাইল হানিয়া, মোহাম্মদ দেইফ, মারওয়ান ইসা, সালেহ আল-আরোরি ও ইয়াহিয়া সিনওয়ারসহ বেশ কয়েকজন বড় মাপের কমান্ডার।
গাজার ভেতরেও প্রাণ হারিয়েছেন রা’দ থাবেদ, উইসাম ফারহাত, নারী নেত্রী জামিলা আল শান্তির মতো অনেকেই। একের পর এক নেতার মৃত্যু হামাসের সামরিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে সরাসরি ধাক্কা দিয়েছে।
তবে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়নি হামাস। খলিল আল-হায়া, খালেদ মেশাল, নিযার আওয়াদল্লাহ ও যাহর জাবরিন সংগঠনের হাল ধরেছেন। সামরিকভাবে তারা এখন মূলত গেরিলা কৌশল ব্যবহার করছেন। ধ্বংস হওয়া টানেল, অস্ত্রভাণ্ডার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরও তারা সীমিত রকেট হামলা, গোপন সরবরাহরেখা ও স্থানীয় প্রতিরোধের মাধ্যমে সক্রিয়তা বজায় রাখছে।

দোহা ও কায়রোতে শান্তি আলোচনা চললেও অস্ত্রসমর্পণ, সীমান্ত ও আঞ্চলিক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মতভেদ থেকেই গেছে। দুর্বলতা থাকা সত্ত্বেও হামাসের রাজনৈতিক অস্তিত্ব এখনও আছে এবং তারা প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে।
যুদ্ধের মধ্যেও হামাস গাজায় প্রায় ৩০ হাজার সরকারি কর্মচারীকে বেতন দিচ্ছে। যদিও সংঘাতকালীন বাস্তবতায় বেতনের মাত্র ২০ শতাংশ অর্থ দেয়া হচ্ছে। তবুও এটি প্রশাসনিক কাঠামোর টিকে থাকার এক দৃষ্টান্ত। বেতন বিতরণের জন্য এনক্রিপ্টেড এসএমএসের মাধ্যমে কর্মীদের নির্দিষ্ট স্থানে ডেকে এনে গোপনে অর্থ দেয়া হয়।
জানা যায়, এই পদ্ধতিতে এ পর্যন্ত ৭০ লাখ ডলার বেতন দেয়া হয়েছে। তবে ইসরাইলি বাহিনী নিয়মিত হামাসের বেতন বিতরণকারীদের নিশানা করে, যাতে সংগঠনটির শাসনক্ষমতা দুর্বল হয়।