ইরানের পরমাণু স্থাপনা লক্ষ্য করে ইজরায়েলি বিমান হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যে তীব্র উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে ইরানে বসবাসরত ভারতীয় বংশোদ্ভূত এবং ভারতীয় নাগরিকদের সতর্ক করল ভারত সরকার। ইরানে ভারতীয় দূতাবাসের অফিসিয়াল এক্স অ্যাকাউন্টের একটি পোস্টে বলা হয়েছে, ‘ইরানের বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে সমস্ত ভারতীয় নাগরিক এবং ইরানে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যক্তিদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সমস্ত অপ্রয়োজনীয় গতিবিধি এড়াতে অনুরোধ করা হচ্ছে। দূতাবাসের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলি অনুসরণ করতে আবেদন করা হচ্ছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের পরামর্শ অনুসারে সুরক্ষা প্রোটোকল অনুসরণ করার অনুরোধ করা হচ্ছে।’ এদিকে ভারতের সঙ্গে ইজরায়েল এবং ইরানের সুসম্পর্ক রয়েছে। ইজরায়েলের সঙ্গে যেখানে ভারতের বিভিন্ন ক্ষেত্রে পার্টনারশিপ রয়েছে, তেমনই ইরানের সঙ্গে ভারতের ব্যবসায়িক সম্পর্ক বহু পুরনো।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’-এর অংশ হিসেবে শুক্রবার ইজরায়েলি বিমান বাহিনী ইরানের ওপর হামলা চালায়। ইজরায়েলি কর্মকর্তাদের মতে, ইরানের পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ সাইট, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্র এবং সামরিক নেতৃত্বকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছিল। ইরানি গণমাধ্যম ও প্রত্যক্ষদর্শীরা দেশটির প্রধান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র নাতাঞ্জসহ বেশ কয়েকটি স্থানে বিস্ফোরণের খবর দিয়েছে। ইরানের সম্ভাব্য প্রতিশোধের আশঙ্কায় ইজরায়েল জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে এবং সম্ভাব্য ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছে। নেতানিয়াহু একে ‘ইজরায়েলের ইতিহাসের চূড়ান্ত মুহূর্ত’ বলে অভিহিত করেছেন।
রেকর্ড করা এক ভিডিয়ো বিবৃতিতে ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা ইসরায়েলের ইতিহাসের একটি চূড়ান্ত মুহূর্তে আছি। কিছুক্ষণ আগে ইজরায়েল অপারেশন রাইজিং লায়ন শুরু করেছে। ইজরায়েলের অস্তিত্বের জন্য এবং ইরানের হুমকির বিরুদ্ধে এই অভিযান এই হুমকি দূর করতে যত দিন লাগবে ততদিন এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

এরপর তিনি আরও বলেন, ‘নিজেদের রক্ষা করতে গিয়ে আমরা অন্যদেরও রক্ষা করি। আমরা আমাদের আরব প্রতিবেশীদের রক্ষা করি। তারাও ইরানের বিশৃঙ্খলা ও হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়েছে। ইরানের প্রক্সি হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে আমাদের পদক্ষেপের ফলে লেবাননে নতুন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং সিরিয়ায় আসাদের খুনি সরকারের পতন ঘটেছে। ওই দুই দেশের মানুষের সামনে এখন সুযোগ এসেছে নতুন করে আরও ভালো ভবিষ্যতের দিকে পদক্ষেপ করার।’ এদিকে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বিস্ফোরণের কথা স্বীকার করেছে। তেহরান জুড়ে বাসিন্দাদের হতবাক করে দিয়েছে এই হামলা।