টেক-অফের পরে উপরে ওঠার পরিবর্তে টলমল করছিল এয়ার ইন্ডিয়ার ড্রিমলাইনার। ক্রমশ নেমে যাচ্ছিল নীচে। খালি চোখে হলেও বোঝা যাচ্ছিল যে বিমানটা নিয়ন্ত্রণে নেই। কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই বিমানের মুখটা উপরের দিকে উঠে গিয়ে লেজের দিকটা নীচের দিকে নেমে যাচ্ছিল। একটা সময় পরে হারিয়ে গেল বিমানটি। আর তারপরই প্রবল বিস্ফোরণ হল। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে আগুনের গোলার মতো উঠতে থাকল।
বৃহস্পতিবার গুজরাটের আমদাবাদ বিমানবন্দরের কাছে এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনারের দুর্ঘটনার পরে এমনই ভয়াবহ ভিডিয়ো (সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা) সামনে এসেছে। যে ভিডিয়ো দেখে বিশেষজ্ঞরা অনুমান করছেন যে টেক-অফের পরেই কোনও একটা সমস্যা হয়েছিল। আর তার জেরেই ঠিকমতো ওড়ার আগেই জনবসতি এলাকার মধ্যে ভেঙে পড়ে বিমান।
উড়ানের কিছুক্ষণ পরেই ‘মে’ডে’ ঘোষণা করা হয়
ভারতের অসামরিক বিমান পরিবহণের নিয়ন্ত্রক ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশনের (ডিজিসিএ) তরফে জানানো হয়েছে, আজ দুপুর ১ টা ৩৮ মিনিটে আমদাবাদ বিমানবন্দরের ২৩ নম্বর রানওয়ে থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার বি৭৮৭-৮ বিমানটি (এআই-১৭১) ওড়ে। টেক-অফের কিছুক্ষণের মধ্যেই ‘মে’ডে’ (বিপদ সংকেত) ঘোষণা করেন পাইলটরা।
তারপর থেকে পাইলটদের সঙ্গে এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের (এটিসি) অফিসাররা কোনওরকম যোগাযোগ করতে পারেনি বলে ডিজিসিএয়ের তরফে জানানো হয়েছে। তারইমধ্যে বিমানবন্দরের চত্বরেই ভেঙে পড়ে বিমানটি। যে লন্ডনের গ্যাটউইকে যাচ্ছিল। মোট ১০ জন বিমানকর্মী, দু’জন পাইলট-সহ এয়ার ইন্ডিয়ার ড্রিমলাইনারে মোট ২৪২ জন ছিলেন। তাঁদের বিষয়ে আপাতত কিছু জানানো হয়নি।

বিমানে ভারতীয়, ব্রিটিশ, কানাডিয়ান ও পর্তুগিজরা ছিলেন
টাটার মালিকাধীন এয়ার ইন্ডিয়ার তরফে জানানো হয়েছে, বিমানে মোট ১৬৯ জন ভারতীয় ছিলেন। ব্রিটিশ নাগরিক ছিলেন ৪৩ জন। একজন কানাডিয়ান ছিলেন। আর পর্তুগিজ ছিলেন সাতজন। যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আরও তথ্য প্রদানের জন্য হটলাইন নম্বর 1800 5691 444 চালু করা হয়েছে। তবে কতজন আহত হয়েছেন, লোকালয়ের মধ্যেই বিমান ভেঙে পড়ায় স্থানীয় বাসিন্দারাও আহত হয়েছেন কিনা, সে বিষয়ে আপাতত এয়ার ইন্ডিয়ার তরফে কিছু জানানো হয়নি।
পুরো পরিস্থিতির উপরে নজর মোদীর
তারইমধ্যে বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী কে রামমোহন নাইডুর সঙ্গে কথা বলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রীকে নাইডু জানিয়েছেন যে উদ্ধারকাজে নজরদারি চালানোর জন্য তিনি অবিলম্বে আমদাবাদে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন যে অবিলম্বে সবরকম সহায়তা প্রদান করতে হবে। সেইসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গেও কথা বলেছেন। যিনি আমদাবাদের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।