বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস ‘কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’ নিতে লন্ডনে গিয়েছেন। তবে তাঁর এই সফর ঘিরে বিতর্কের অন্ত নেই। লন্ডনে প্রবাসী বাংলাদশিদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে ইউনুসকে। এদিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার ইউনুসের সঙ্গে দেখা করতে অস্বীকার করেছেন বলে দাবি করা হয়েছে বাংলাদেশি মিডিয়াতে। আর এই কথা নাকি ইউনুস নিজে মুখেই স্বীকার করেছেন।
সফরের আগে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল চার দিনের সরকারি সফরে নাকি লন্ডনে যাচ্ছেন ইউনুস। তবে এটা কোনও ভাবেই সরকারি সফর বলে মনে হচ্ছে না। সফরকালে বাকিংহাম প্যালেসে ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে দেখা করার কথা ইউনুসের। সেখানে তিনি ‘কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’ নেবেন। এছাড়া সরকার দাবি করেছিল, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের সঙ্গে বৈঠক হবে ইউনুসের। তবে সেই বৈঠক এখন হবে না বলেই ধরে নেওয়া যায়।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস চ্যাথাম হাউজের অনুষ্ঠানে জানান, সাক্ষাতের অনুরোধ করলেও তাতে সাড়া দেননি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমার। এর আগে ইউনুস লন্ডনে পৌঁছলে তাঁকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানাতে যায়নি ব্রিটিশ সরকারের কেউ। যার জেরে কান লাল বাংলাদেশের। সাধারণত কোনও দেশের রাষ্ট্রপ্রধান যদি ব্রিটেন সফরে যান, তাহলে ব্রিটিশ সরকারের কোনও না কোনও পর্যায়ের প্রতিনিধির সেখানে গিয়ে সেই রাষ্ট্রপ্রধানকে আমন্ত্রণ জানানোই রীতি।
এদিকে বাংলাদেশের এমনই হাল, তাদের রাষ্ট্রপ্রধান যে দেশে যাচ্ছেন, সেই দেশের প্রধানমন্ত্রী কোথায় আছেন, তা আগে থেকে জানেই না আমলারা। এই নিয়ে শফিকুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারের সঙ্গে মহম্মদ ইউনুসের কোনও বৈঠকের সূচি এখনও ঠিক হয়নি। স্টারমার এখন কানাডায় আছেন বলে আমাদের জানিয়েছেন ব্রিটিশ এক সাংসদ।’এদিকে ব্রিটেনে বসবাসরত বাংলদাদেশিদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে ইউনুসকে। লন্ডনের রাস্তায় ইউনুসের কুশপুত্তলিকায় জুতোর মালা পরানো হয়। এদিকে ডাস্টবিনে ইউনুসের আর তাঁর প্রেস সচিব শফিকুল আলমের ছবি লাগানো হয়। এদিকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুর মুক্তির দাবিতেও অনেকে প্রতিবাদ দেখান লন্ডনের রাস্তায়।

এর আগে ইউনুসকে আমন্ত্রণ জানিয়েও নাকি ‘অপমান’ করেছিল ফ্রান্স। এই আবহে ফ্রান্সের আমন্ত্রণ ফিরিয়ে দেন ইউনুস। জানা যায়, রাষ্ট্রসংঘের তৃতীয় ওশেন কনফারেন্সে যোগদানের জন্যে মহম্মদ ইউনুসকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমুনায়েল ম্যক্রোঁ। তবে সেই সফরকালে নাকি ম্যাক্রোরঁ সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসতে চেয়েছিলেন ইউনুস। যদিও তাতে প্যারিসের তরফ থেকে সাড়া পাওয়া যায়নি। এই আবহে সফরে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ইউনুস।