সোমবার গভীর রাতে (ইংরেজি মতে ২৯ জুলাই) বঙ্গোপসাগর ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে দুটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি (এনসিএস) জানিয়েছে, প্রথম কম্পন হয় ৬.৩ মাত্রার। ভূমিকম্পটি হয় রাত ১২টা ১১ মিনিটে বঙ্গোপসাগরে, দ্বিতীয় ৬.৫ মাত্রার ভূমিকম্পটি হয় রাত ১টা ৪১ মিনিটে।
জানা গিয়েছে, দুটি ভূমিকম্পেরই গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার। এনসিএস জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কাছে। অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) এবং ইউরোপীয়-ভূমধ্যসাগরীয় সিসমোলজিক্যাল সেন্টার (ইএমএসসি) নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কাছে ৬.৫ মাত্রার ভূমিকম্প রেকর্ড করেছে, যার উৎপত্তিস্থল গ্রেট নিকোবারের ক্যাম্পবেল বে থেকে প্রায় ৯৪ কিলোমিটার পশ্চিমে।
ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল সেন্টার ফর ওশান ইনফরমেশন সার্ভিসেস (আইএনসিওআইএস) জানিয়েছে, এই ভূমিকম্পে ভারতে সুনামির কোনও আশঙ্কা নেই। প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, এই ভূমিকম্পে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, পশ্চিমবঙ্গ বা ওড়িশায় কোনও প্রাণহানি বা সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির খবরও পাওয়া যায়নি। উপকূলীয় এলাকা ও দ্বীপগুলোতে ভূমিকম্পের প্রভাব মূল্যায়ন করা হচ্ছে, তবে কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

ইউএসজিএস জানিয়েছে, প্রায় ২৫ হাজার মানুষ এসব ভূমিকম্পের মৃদু কম্পন অনুভব করতে পারলেও বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা কম। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ ভারতের অন্যতম ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চল, যা ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল ৫-এর মধ্যে পড়ে। এই অঞ্চলটি সুন্দা মেগাথ্রাস্ট বরাবর অবস্থিত, যেখানে ইন্দো-অস্ট্রেলিয়ান প্লেট এবং সুন্দা প্লেট একে অপরের সাথে সংঘর্ষ করে। এই টেকটোনিক ক্রিয়াকলাপ এই অঞ্চলে ঘন ঘন ভূমিকম্প এবং আগ্নেয়গিরির ক্রিয়াকলাপ ঘটায়। ২০০৪ সালের ৯.১ মাত্রার ভূমিকম্প এবং পরবর্তী সুনামিতে এই অঞ্চলটি বিধ্বস্ত হয়েছিল, যাতে ১০ হাজারেরও বেশি লোক মারা যায়।