পহেলগাঁও জঙ্গি হামলা এবং অপারেশন সিঁদুরের পর বেশ কয়েক সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। এবার ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) তাদের সাংগঠনিক বিষয়গুলির ওপর নজর দিতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। বিশেষত দলের পরবর্তী জাতীয় সভাপতি নিয়োগের দিকে মনোনিবেশ করতে পারে বিজেপি। যদিও দলের তরফে এখনও এই নিয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়নি। তবে সূত্র বলছে যে এই নিয়ে দলের ভিতরে আলোচনা চলছে এবং জুনের মাঝামাঝি সময়ে একটি আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে।
পরবর্তী জাতীয় সভাপতি নির্বাচনের আগে বিজেপি বেশিরভাগ রাজ্যে সাংগঠনিক নির্বাচন সম্পন্ন করেছে, যা দলের গঠনতন্ত্রের অধীনে প্রয়োজনীয় পূর্বশর্ত। উত্তরপ্রদেশে ৭০ জন জেলা সভাপতির নামও সম্প্রতি ঘোষণা করা হয়েছে। এর ফলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যে শীঘ্রই বিজেপি সভাপতি পদ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তা নিয়ে জল্পনা আরও জোরদার হয়েছে।
২২ এপ্রিল পহেলগাঁও সন্ত্রাসী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি সভাপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়াটি সাময়িকভাবে বিলম্বিত হয়েছিল বলে জানা গেছে। দলীয় সূত্রের খবর, জাতীয় স্তরে নিয়োগের আগে উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যগুলিতে বিজেপি নতুন রাজ্য সভাপতিদের নাম চূড়ান্ত করতে পারে। এদিকে বাংলায় পরবর্তী রাজ্য সভাপতি কে হবেন, তা নিয়েও জল্পনা তুঙ্গে।উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যে জাতপাতের সমীকরণ গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে রাজ্য সভাপতি হিসেবে এবার ব্রাহ্মণ মুখের কথা ভাবা হচ্ছিল। তবে দলের একাংশের মতে কোনও ওবিসি নেতাকে এই পদে বসানো উচিত। এদিকে মধ্যপ্রদেশে বর্তমান নেতৃত্ব কাঠামোতে একজন ওবিসি মুখ্যমন্ত্রী এবং একজন ব্রাহ্মণ রাজ্য সভাপতি রয়েছেন – এই সমীকরণই এতদিন ধরে দলের পক্ষে কাজ করেছে। তবে সূত্রের খবর, বর্তমানে রাজ্য ও জাতীয় নেতৃত্বের মধ্যে আদিবাসীদের প্রতিনিধিত্ব তুলনামূলকভাবে কম থাকায় দল মধ্যপ্রদেশে একজন আদিবাসী নেতাকে রাজ্য সভাপতি করার কথা ভাবছে।

এই সবের মাঝে বিজেপির জাতীয় সভাপতি হওয়ার দৌড়ে আছেন তিন নেতা। শোনা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান তাঁদের মধ্যে অন্যতম। ওড়িশার একজন গুরুত্বপূর্ণ ওবিসি নেতা তিনি। তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতা এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠতার বিষয়ে সবাই জানে।
এদিকে মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং বর্তমানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টরের নাম নিয়েও নাকি চর্চা চলছে। এই দুই নেতারই প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা অগাধ। এছাড়া তাঁদের সাংগঠনিক অভিজ্ঞতাও রয়েছে। উল্লেখ্য, বিজেপির বর্তমান জাতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে এই পদে রয়েছেন। ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের সময় তাঁর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। ২০২৬ সালে বাংলা, অসময় সহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য নির্বাচনের আগে নড্ডার উত্তরসূরিকে বেছে নিতে চাইছে বিজেপি।