আরজি করে তরুণী চিকিৎসককে যৌন হেনস্থার পর খুনের ঘটনায় উত্তাল গোটা রাজ্য। চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মীদের মধ্যে এনিয়ে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে বড়সড় গলদ সামনে এসেছে। হাসপাতালের মধ্যেই যেভাবে নৃশংস এই ঘটনা ঘটেছে তাতে নিরাপত্তার অভাব বোধ করেছেন অন্যান্য চিকিৎসকরা। আরজি করে সেমিনার হলে যেমন সিসিটিভি ছিল না তেমনি হাসপাতালের একাধিক জায়গায় সিসিটিভি থাকলেও বহু ক্যামেরা আবার অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। শুধু আরজি কর হাসপাতালই নয়, শহরের অন্যান্য অনেক হাসপাতাল এবং সরকারি হোমগুলিরও একই অবস্থা রয়েছে। একাধিক জায়গাতে যেমন সিসিটিভি নেই আবার সিসিটিভি থাকলেও সেগুলি বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। এই অবস্থায় সব থানার পুলিশকে বিশেষ নির্দেশ দিল লালবাজার।
লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, আরজি কর হাসপাতালে ২১০টি সিসিটিভি আছে। তবে এর মধ্যে বড় সংখ্যক সিসিটিভি অকেজো হয়ে পড়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৪৮টি মতো সিসিটিভি বিকল হয়ে রয়েছে আরজি করে। তবে এই ঘটনার পরেই নড়েচড়ে বসেছে কলকাতা পুলিশ। তাই নিরাপত্তা নিয়ে আর কোন খামতি রাখতে চাইছে না পুলিশ। সেই কারণে বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, আরজি করকাণ্ডের তদন্তের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৭ দিনের সময় চেয়েছিলেন। তারপর তিনি নিজেই সিবিআইয়ের আর্জি করবেন বলে জানিয়েছিলেন। তবে তার আগেই কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
জানা গিয়েছে, সমস্ত হাসপাতাল, হোমের সিসিটিভি নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর খতিয়ে দেখতে হবে। লালবাজারের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ১৫ দিনের মধ্যে এই সমস্ত সিসিটিভি খতিয়ে দেখতে হবে। এছাড়াও ৩০ দিনের ফুটেজ যাতে সংরক্ষণ করা যায় তার ব্যবস্থা করতে হবে। সাধারণত যে কোনও অপরাধের কিনারার ক্ষেত্রে সিসিটিভির ভূমিকা অপরিসীম। সংশ্লিষ্ট অপরাধের ক্ষেত্রে ফুটেজ।পাওয়া গেলে তদন্ত আরও সহজ হয়ে যায়। অপরাধীকে দ্রুত শনাক্ত করে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়। কিন্তু, সিসিটিভি না থাকলে বা বিকল হয়ে থাকলে সেক্ষেত্রে অনেকটাই সময় লেগে যায়। যেমনটা আরজি করের ক্ষেত্রে হয়েছে। আরজি করে সেমিনার হলে সিসিটিভি ছিল না। ফলে ঘটনার সময় আরও কেউ ছিল কিনা তা জানা সম্ভব হচ্ছে না। সিসিটিভি থাকলে অতি সহজেই সেই উত্তর পাওয়া যেত। ফলে তদন্ত অনেকটাই সহজ হয়ে যেত।