পাকিস্তানের সঙ্গে সাম্প্রতিক সামরিক সংঘর্ষের প্রথম দিনেই ভারত যুদ্ধবিমান হারিয়েছিল বলে স্বীকার করেছেন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহান। শুধু তাই নয়, তিনি দাবি করেছেন, কৌশলগত ভুলের কারণেই সেই যুদ্ধবিমানগুলি হারিয়েছিলাম আমরা। সিঙ্গাপুরের মাটিতে বিদেশি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এহেন দাবি করেছেন সিডিএস। আর তাঁর এই মন্তব্যের পরে ফের একবার সরব হয়েছেন বিরোধীা।
সিঙ্গাপুরে ব্লুমবার্গকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেনারেল চৌহান বলেন, ‘যুদ্ধবিমান যে ধ্বংস হয়েছে, সেটা গুরুত্বপূর্ণ না, গুরুত্বপূর্ণ হল কেন সেগুলো ধ্বংস হয়েছিল। কী ভুল করা হয়েছিল। সেগুলি গুরুত্বপূর্ণ। সংখ্যা গুরুত্বপূর্ণ নয়। ভালো বিষয় হল, আমরা কৌশলগত ভুলটি বুঝতে পেরেছিলাম, এবং সঙ্গে সঙ্গে এর প্রতিকার করেছিলাম। সেই ভুল সংশোধন করে দুই দিন পরই আবার আমরা হামলা করেছিলাম। দূরপাল্লার লক্ষ্যবস্তুকে নিশানা করে ধ্বংস করেছিল আমাদের যুদ্ধবিমানগুলি।’
এরপরই কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে একটি পোস্ট করে লেখেন, ‘মোদী সরকার দেশকে বিভ্রান্ত করেছে। যুদ্ধের কুয়াশা এখন কেটে যাচ্ছে। কার্গিল রিভিউ কমিটির আদলে একটি স্বাধীন বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হোক। তার মাধ্যমে আমাদের প্রতিরক্ষা প্রস্তুতির ব্যাপক পর্যালোচনা করা উচিত।’ প্রধানমন্ত্রীকে তোপ দেগে খাড়গে লেখেন, ‘মোদী আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর বীরত্বের জন্য ব্যক্তিগত কৃতিত্ব গ্রহণ করছেন।’

এদিকে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেন, ‘এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে প্রধানমন্ত্রী সর্বদলীয় বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন না বা সংসদের ওপর আস্থা দেখাবেন না। তবে সিঙ্গাপুরে সিডিএসের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে গোটা দেশ অপারেশন সিঁদুরের প্রথম পর্যায়ের কথা জানতে পেরেছে। বিরোধী নেতাদের ওপর কি প্রধানমন্ত্রী আরও আগে আস্থা দেখাতে পারতেন না?’
রাজ্যসভায় তৃণমূলের ডেপুটি লিডার সাগরিকা ঘোষ আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে লেখেন, ‘আন্তর্জাতিক মিডিয়া কেন এটা আগে প্রকাশ করবে? কেন এই তথ্যগুলি প্রথমে ভারতের জনগণকে, সংসদ এবং জনপ্রতিনিধিদের দেওয়া হল না?’ অপর এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘অপারেশন সিঁদুর নিয়ে অনেক নাগরিকের উদ্বেগ করেয়েছে। জাতীয় স্বার্থে তা উত্থাপন করা উচিত। এভাবেই একটি শক্তিশালী গণতন্ত্র নিজের অভিজ্ঞতা থেকে শেখে। নাগরিক ও বিরোধী দলকে আস্থায় নিতে হবে। নরেন্দ্র মোদী সরকার আর বিরোধীদের দাবি অস্বীকার করতে পারছে না। সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকতে হবে।’