ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো আবারও আলোচনার শীর্ষে উঠে এসেছেন। Forbes-এর ২০২৫ সালের বিশ্বের সর্বোচ্চ উপার্জনকারী ক্রীড়াবিদদের তালিকায় ১ নম্বরে জায়গা করে নিয়েছেন পর্তুগিজ ফুটবল তারকা। গত এক বছরে তিনি আয় করেছেন চোখ ধাঁধানো ২৭৫ মিলিয়ন ডলার ভারতীয় মূল্যে যা প্রায় ২,৩৫৩ কোটি টাকা। এই অর্থ Forbes-এর ইতিহাসে যেকোনো সক্রিয় ক্রীড়াবিদের তৃতীয় সর্বোচ্চ বার্ষিক আয়। ৪০ বছর বয়সেও ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর অতুলনীয় বাণিজ্যিক প্রভাব বিশ্বজুড়ে অব্যাহত রয়েছে।
রোনাল্ডোর জন্য রেকর্ড গড়ার এটা আরও একটা বছর
টানা তৃতীয় বছরের মতো ফোর্বস ম্যাগাজিনের ‘বিশ্বের সর্বোচ্চ আয় করা ক্রীড়াবিদদের’ তালিকার শীর্ষস্থানে রয়েছেন পর্তুগিজ ফুটবল তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। এই মরশুমে তার মোট আয় দাঁড়িয়েছে ২৭৫ মিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ১৫ মিলিয়ন ডলার বেশি।
এই ২৭৫ মিলিয়ন ডলার আয় এসেছে মাঠের পারিশ্রমিক ও মাঠের বাইরের আয় থেকে। যেখানে রয়েছে স্পনসরশিপ, ব্যক্তিগত ব্র্যান্ড এবং ব্যবসায়িক স্বার্থ। জুভেন্তাস ছেড়ে সৌদি প্রো লিগের দল আল নাসরে যোগ দেওয়ার পর, রোনাল্ডোর বেতন দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। রোনাল্ডো বর্তমানে প্রতিবছর ২০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি ক্লাব থেকে আয় করেন বলে জানা গেছে। তবে তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছে মাঠের বাইরের আয়, যেখানে রয়েছে বিশ্বজুড়ে স্পনসরশিপ চুক্তি, নিজের CR7 ব্র্যান্ডের হোটেল, পারফিউম ও জিমের ব্যবসা।

রোনাল্ডোর প্রতিদ্বন্দ্বীরা অনেক পিছিয়ে রয়েছেন-
তুলনা করলে, তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাস্কেটবল তারকা লেব্রন জেমসের আয় ছিল ১৩৩.৮ মিলিয়ন ডলার। রোনাল্ডোর অর্ধেকেরও কম। যদিও লেব্রন সিনেমা ও স্পোর্টস টিম কেনার মতো ব্যবসায়িক আগ্রহ বাড়িয়েছেন, তার উপার্জন এখনও রোনাল্ডোর রেকর্ড ভাঙা আয়ের ধারেকাছেও যায় না।
২০২৫ সালের Forbes তালিকায় সর্বনিম্ন আয় ছিল ৫৩.৬ মিলিয়ন ডলার, যা ২০২৪ সালের তুলনায় ১৯ শতাংশ বেশি। ২০১৭ সালে, সেই নিম্নসীমা ছিল মাত্র ২৭.২ মিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ আজকের একজন ক্রীড়াবিদ সেই আয়ে সে সময় তালিকার ৬ নম্বরে থাকতেন।
কেন রোনাল্ডো আজও বিশ্বব্যাপী এক অদ্বিতীয় আইকন
রোনাল্ডোর অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক প্রভাবের সবচেয়ে চোখে পড়ার মত দিক হল তার বয়স ও দীর্ঘস্থায়ী সাফল্য। যেখানে বেশিরভাগ ক্রীড়াবিদ বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উপার্জনে ভাটা পড়তে দেখেন, রোনাল্ডো সেখানে ব্যতিক্রম। সৌদিতে স্থানান্তর শুধু তার কেরিয়ার দীর্ঘায়িত করেনি, বরং তাকে নতুন বাজার ও দর্শকদের সামনে নিয়ে এসেছে, যার ফলে তার ব্র্যান্ড ভ্যালু আরও বেড়েছে।
রোনাল্ডোর এই আর্থিক প্রভাবের দীর্ঘায়ু প্রমাণ করে যে, তিনি শুধুমাত্র মাঠের খেলোয়াড় নন, বরং একজন বাণিজ্যিক জাগারনট। তার CR7 ব্র্যান্ডের পোশাক, সুগন্ধি ও ফিটনেস প্রোডাক্টস, এবং Nike ও Binance-এর মতো বিশ্বমানের ব্র্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারিত্ব, তাকে এমন একটি বৈচিত্র্যময় ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য তৈরি করতে সাহায্য করেছে, যা কেবল মাঠের পারফরম্যান্সের ওপর নির্ভর করে না।
বিশ্বের সবচেয়ে ফলোয় করা ব্যক্তিদের একজন হিসেবে, তার সামাজিক মাধ্যম উপস্থিতি এমন যে, যে কোনও ব্র্যান্ড বা উদ্যোগ যা তার সঙ্গে যুক্ত হয়, তা বিশ্বব্যাপী নজিরবিহীন পরিচিতি পায়। ফলে, রোনাল্ডো আজও, কেরিয়ারের গোধূলিলগ্নেও, অপরিসীম বাজার মূল্য ধরে রেখেছেন।
দেখুন সেরা দশের তালিকা-
১) ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো, ফুটবল: $২৭৫ মিলিয়ন (£২০৬.৬ মিলিয়ন)
২) স্টিফেন কারি, বাস্কেটবল: $১৫৬ মিলিয়ন (£১১৭.২ মিলিয়ন)
৩) টাইসন ফিউরি, বক্সিং: $১৪৬ মিলিয়ন (£১০৯.৭ মিলিয়ন)
৪) ড্যাক প্রেসকট, আমেরিকান ফুটবল: $১৩৭ মিলিয়ন (£১০৩ মিলিয়ন)
৫) লিওনেল মেসি, ফুটবল: $১৩৫ মিলিয়ন (£১০১.৪ মিলিয়ন)
৬) লেব্রন জেমস, বাস্কেটবল: $১৩৩.৮ মিলিয়ন (£১০৫.৫ মিলিয়ন)
৭) জুয়ান সোটো, বেসবল: $১১৪ মিলিয়ন (£৮৫.৭ মিলিয়ন)
৮) করিম বেনজেমা, ফুটবল: $১০৪ মিলিয়ন (£৭৮.২ মিলিয়ন)
৯) শোহেই ওহটানি, বেসবল: $১০২.৫ মিলিয়ন (£৭৭ মিলিয়ন)
১০) কেভিন ডুরান্ট, বাস্কেটবল: $১০১.৪ মিলিয়ন (£৭৬.২ মিলিয়ন)