ঘরে চাপ কমাতে ভারতের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধাতে চেয়েছিল মহম্মদ ইউনুসের সরকার। সম্প্রতি এক রিপোর্টে এমনই দাবি করা হয়েছিল। ইউনুসের সেই প্রচেষ্টাকে নাকি বানচাল করে দেন বাংলাদেশি সেনা প্রধান জেনারে ওয়াকার-উজ-জামান। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, নির্বাচন নিয়ে দেশের মধ্যে চাপে আছেন ইউনুস। এই আবহে জাতীয়তাবোধের বাঁধনে দেশকে ঐক্যবদ্ধ করতে এবং সরকার বিরোধী মনোভাব দূর করতেই ভারতের সঙ্গে সীমান্তে সংঘর্ষ বাঁধাতে চেয়েছিল ইউনুসের সরকার।
রিপোর্টে বলা হয়, বাংলাদেশ সেনার এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাকি জানিয়েছিলেন, রাজনৈতিক দল, সামরিক বাহিনী এবং জনসাধারণের অসন্তোষের চাপের মুখে আছেন ইউনুস। এই আবহে তিনি সীমান্তে ভারতের সাথে ছোটখাটো সংঘর্ষের পরিকল্পনা করার চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ। তাঁর কৌশল ছিল দেশপ্রেমের আড়ালে গিয়ে নিজের সমালোচনা থেকে বাঁচা। একই সাথে তার শাসনকে বৈধতা দেওয়ার জন্য নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা এড়িয়ে যাওয়া।
অভিযোগ, বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান এবং আইএসআই ঘনিষ্ঠ লেফটেন্যান্ট জেনারেল মহম্মদ ফয়জুর রহমান এই ছকের রূপরেখা তৈরি করেছিলেন। অপারেশন সিঁদুরের সময় ভারত যখন বাংলাদেশ সীমান্তে অবৈধবাসীদের পুশপব্যাক করছিল, সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই ভারত-বাংলাদেশ সংঘাত তৈরির চেষ্টা করতে চেয়েছিল ইউনুস সরকার।এই আবহে পুশব্যাক নিয়ে সম্প্রতি প্রশ্ন করা হল বাংলাদেশি সেনাকে। এই নিয়ে বাংলাদেশি সেনা কর্মকর্তা কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ বিষয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ও কোস্টগার্ড সতর্ক আছে। সীমান্ত এলাকায় টহল বাড়ানো হয়েছে, গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। তবে এই বিষয়ে এখনও সেনাবাহিনীর যুক্ত হওয়ার মতো পরিস্থিতি হয়নি।’

উল্লেখ্য, এর আগে রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, সীমান্তে নাকি বিজিবিকে আগ্রাসী হতে বলা হয়েছিল। বিএসএফকে উস্কানি দেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল বিজিবিকে। এদিকে সীমান্তের কাছে সেনা ইউনিট পর্যন্ত মোতায়েনের পরিকল্পনা করেছিলেন খলিলুররা। তবে সেনা প্রধান ওয়াকার নাকি এই পরিকল্পনার কথা জানতে পেরে যান এবং সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধির চেষ্টার কারণ ও যুক্তি জানতে চান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে। বিজিবি অফিশিয়ালরা নাকি দাবি করেন, ইউনুসের সরকারি বাসভবন যমুনা থেকে মৌখিক নির্দেশ এসেছিল তাদের কাছে।
রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে জেনারেল ওয়াকার উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ডেকেছিলেন। তাতে চিফ অফ জেনারেল স্টাফ, এয়ার চিফ মার্শাল মাহমুদ খান এবং নৌসেনা প্রধান অ্যাডমিরাল নাজমুল হাসানরা ছিলেন। বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর মাথারা ভারতকে খোঁচানোর এই পরিকল্পনাকে খারিজ করে দিয়েছিলেন। এরপর জেনারেল ওয়াকার বার্তা পাঠান খলিলুরকে। সীমান্তের কাছে সেনা মোতায়েন করতে অস্বীকার করেন জেনারেল ওয়াকার। আর বাংলাদেশ সেনার সাম্প্রতিক বয়ানে সেই অবস্থানই ফুটে উঠল।