ইরানের চাবাহার বন্দরের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে আমেরিকা। তবে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, চাবাহার বন্দরের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা থেকে ভারত ছয় মাসের জন্য অব্যাহতি পেয়েছে। চাবাহার বন্দরের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ২৯শে অক্টোবর থেকে কার্যকর হয়েছে।

বুধবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইরানের চাবাহার বন্দরের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা থেকে ভারত ছয় মাসের জন্য অব্যাহতি পেয়েছে, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি আফগানিস্তান এবং মধ্য এশিয়া-পূর্ব রাশিয়ায় প্রবেশাধিকার প্রদান করে।
ভারতের উন্নয়নমূলক ও মানবিক সেবা অব্যাহত থাকবে।
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া অস্থায়ী ছাড় ভারতকে তার উন্নয়নমূলক এবং মানবিক প্রকল্পগুলি চালিয়ে যেতে সহায়তা করবে। তিনি বলেন, চাবাহার বন্দর ভারতকে আফগানিস্তান এবং মধ্য এশিয়ায় সরাসরি প্রবেশাধিকার প্রদান করে, যার ফলে পাকিস্তানকে এড়িয়ে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে।
২০১৬ সালে চাবাহার নিয়ে ভারত ও ইরান একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে
উল্লেখ্য, ইরানের সাথে একটি চুক্তির আওতায় ভারত ২০১৬ সালে চাবাহার বন্দরের উন্নয়ন শুরু করে। এই প্রকল্পের প্রাথমিক লক্ষ্য হলো ভারত, ইরান এবং আফগানিস্তানের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় বাণিজ্য পথ তৈরি করা, যা মধ্য এশিয়া এবং রাশিয়া পর্যন্তও প্রসারিত হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ভারতকে দেওয়া এই ছাড় তাদের আঞ্চলিক কৌশল এবং জ্বালানি নিরাপত্তা বজায় রাখতে সাহায্য করবে।
ভারত-মার্কিন আলোচনা অব্যাহত
ইরানের চাবাহার বন্দরের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে প্রকল্পের অগ্রগতি ধীর হয়ে গিয়েছিল। তবে, এই ছয় মাসের ছাড় ভারতকে বন্দরের উন্নয়ন এবং পরিচালনায় নতুন শক্তি নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেবে। বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে যে ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই বিষয়ে অগ্রসর আলোচনায় রয়েছে। উভয় দেশই আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতার জন্য একটি সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি ভাগ করে নেয়।
ভারত রাশিয়ান তেল কোম্পানিগুলির উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞাগুলিও অধ্যয়ন করছে
জয়সওয়াল আরও বলেন যে ভারত রাশিয়ান তেল কোম্পানিগুলির উপর সাম্প্রতিক মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রভাবগুলি অধ্যয়ন করছে। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “আমরা রাশিয়ান তেল কোম্পানিগুলির উপর সাম্প্রতিক মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রভাবগুলি অধ্যয়ন করছি। আমাদের সিদ্ধান্তগুলি স্বাভাবিকভাবেই বিশ্ব বাজারের পরিবর্তিত গতিশীলতা বিবেচনায় নিয়ে নেওয়া হয়।”
জ্বালানি নিরাপত্তার বিষয়ে ভারতের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে জয়সওয়াল বলেন, “জ্বালানির উৎসের বৃহত্তর ইস্যুতে ভারতের অবস্থান সুপরিচিত। আমাদের ১.৪ বিলিয়ন মানুষের জ্বালানি চাহিদা মেটাতে আমরা বৈচিত্র্যময় এবং সাশ্রয়ী মূল্যের জ্বালানি উৎস নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”