কয়েক দিন আগেই আমেরিকায় সেদেশের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে যোগ দিয়েছিলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির। কোনও পাকিস্তানি রাষ্ট্রীয় নেতা পদাধিকারী না হয়েও মুনিরের এই মার্কিন সফরে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ভোজ খাওয়া বেশ দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল আন্তর্জাতিক মহলের। এবার সেই পাকিস্তানেরই বায়ুসেনা প্রধান জাহির আহমেদ বাবর সিধু ছুটলেন আমেরিকায়। কিন্তু কেন? এদিকে, আজই প্রতিরক্ষা অবকাঠামো সংক্রান্ত চুক্তিতে ভারত ও আমেরিকা স্বাক্ষরে সহমত হয়েছে। এই খবরের মাঝেই পাক বায়ুসেনা প্রধানের মার্কিন সফর বেশ তাৎপর্যবাহী।
মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ ও ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের মধ্যে সদ্যই ফোনে হয়েছে কথা। আর সেই সূত্র ধরেই জানা গিয়েছে, খুব শিগগিরই ভারত ও আমেরিকা স্বাক্ষর করতে চলেছে আগাম ১০ বছরের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের অবকাঠামো সংক্রান্ত চুক্তিতে। সদ্য পেন্টাগনে ভারতের বিদেশমন্ত্রী জয়শংকরের সঙ্গেও বৈঠক করেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব। তারপরই পেন্টাগনের মুখপাত্রের তরফে এই চুক্তির খবর জানানো হয়।
জানা যাচ্ছে, পরবর্তীতে হেগসেথের সঙ্গে রাজনাথের সাক্ষাৎকালেই এই চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে। এরই মাঝে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আরও এক খবর উঠে এসেছে। জানা গিয়েছে, আমেরিকা থেকে খুব শিঘ্রই ভারতে আসছে ৬ টি অ্যাপাচে AH-64E অ্যাটাক হেলিকপ্টার। এই হেলিকপ্টার ভারতে সরবরাহে ১৫ মাস দেরি করেছে আমেরিকা। তবে তারপর শেষমেশ ভারতে আসছে আরও ৬ অ্যাপাচে লড়াকু যুদ্ধ হেলিকপ্টার। এই ৬ হেলিকপ্টার পেতে ভারতের সঙ্গে আমেরিকার ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তি হয়েছিল।

এদিকে, ভারতে যখন অ্যাপাচে অ্যাটাক হেলিকপ্টার ঢোকার খবর উঠে এসেছে, এবং ভারত মার্কিন প্রতিরক্ষা ডিল নিয়ে বড় আপডেট উঠে আসছে, তখনই আবার মার্কিন মুলুকে সফরে গিয়েছেন পাকিস্তানের নৌসেনা প্রধান জাহির সিধু। কেন তিনি সেখানে? ‘ইন্ডিয়া টুডে’র খবর বলছে, আমেরিকার সঙ্গে থিতিয়ে পড়া প্রতিরক্ষা-সম্পর্ককে জাগিয়ে তুলতে মার্কিন সফরে গিয়েছেন পাকিস্তানি বায়ুসেনা চিফ।
উল্লেখ্য, অপারেশন সিঁদুরের সময় চিনের অস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানি প্রতিরক্ষা কার্যত ভেঙে পড়ে। এই পরিস্থিতিতে মুনিরের মার্কিন সফরের সপ্তাহ খানেক পরই আমেরিকায় পাকিস্তানি বায়ুসেনা প্রধান আমেরিকায় গিয়ে মার্কিন সেনা ও নাগরিক নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেন। মার্কিন বায়ুসেনা প্রধানের সঙ্গেও তিনি বসেন আলোচনায়। জানা যাচ্ছে, সেখানে সহযোগিতা, আন্তঃকার্যক্ষমতা এবং প্রযুক্তি-ভিত্তিক সামরিক বিনিময় নিয়ে কথা হয়েছে।
খবর, আমেরিকায় পাকিস্তানি বায়ুসেনা প্রধানের এই সফরের নেপথ্য রয়েছে মার্কিন অস্ত্রের দিকে পাকিস্তানের নজর। ওউ মিডিয়া রিপোর্ট বলছে, নিজেদের আকাশপথের প্রতিরক্ষা ধারালো করতে ৭০ টি এফ ১৬ যুদ্ধ বিমান কেনার দিকে নজর রয়েছে পাকিস্তানের। এছাড়াও, আমেরিকার এআইএম ৭ স্প্যারো এয়ার টু এয়ার মিসাইলের দিকেও নজর রয়েছে ইসলামাবাদের।