Iran Vs Israel Military Comparison।  ব্যালিস্টিক মিলাইলের কাছে ফেল আয়রন ডোম

Spread the love

ইরান ও ইজরায়েল একে অপরের ওপর ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে। এসব হামলা ও পাল্টা পদক্ষেপ উভয় দেশকেই একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের কাছাকাছি নিয়ে এসেছে। একই সময়ে, আশঙ্কা করা হচ্ছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও কোনও না কোনওভাবে এই সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে। তবে আমেরিকা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আগে এটা জানা জরুরি ইরান ও ইজরায়েলের সেনাবাহিনী কতটা শক্তিশালী। 

ইরানের জনসংখ্যা ৮ কোটি ৮০ লাখ এবং আয়তন ১৬ লাখ বর্গকিলোমিটার। সেখানে ইজরায়েলের জনসংখ্যা মাত্র ৯ লাখ এবং আয়তন প্রায় ২২ হাজার বর্গকিলোমিটার। ইরানের সামরিক বাহিনী দুই ভাগে বিভক্ত- প্রচলিত সামরিক বাহিনী ও আধাসামরিক রেভল্যুশনারি গার্ড। প্রচলিত বাহিনীর প্রায় ৬ লাখ এবং রেভল্যুশনারি গার্ডের প্রায় দুই লাখ সেনা রয়েছে, যাদের অনেকেই কুদস ফোর্স, মিসাইল কমান্ড ও সাইবার ইউনিটে মোতায়েন রয়েছে। কুদস ফোর্স অপ্রচলিত যুদ্ধ এবং সামরিক গোয়েন্দা অভিযানে বিশেষজ্ঞ। ইরানের বিমান বাহিনীকে দুর্বল বলে মনে করা হয় – এর প্রায় ৩৫০টি সোভিয়েত-যুগের বিমান রয়েছে, যার অনেকগুলি ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দিয়েছিল। তবে ইরান ‘শাহেদ’ ড্রোনের মতো ড্রোন তৈরিতে এগিয়ে আছে। ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য রাশিয়ার কাছেও এই ড্রোন তারা বিক্রি করেছিল। সম্প্রতি এক ইজরায়েলি কর্মকর্তা বলেছেন, ইরান মাল্টি-ওয়ারহেড ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে, যা ইজরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাকে নতুন করে চ্যালেঞ্জ করছে। 

তবে ইরানের শীর্ষ সামরিক কমান্ডারদের নিরাপত্তার বিষয়টি তাদের জন্য একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। সাম্প্রতিক সময়ে ইজরায়েলি হামলায় রেভল্যুশনারি গার্ডের প্রধান জেনারেল হোসেইন সালামি ও চিফ অফ স্টাফ জেনারেল মহম্মাদ বাঘেরি নিহত হয়েছেন। পরে ইরানের নবনিযুক্ত সেনাপ্রধান আলি শাদমানিও মারা যান ইজরায়েলের হামলায়। 

ইরান কাওসারের মতো দেশীয় প্রযুক্তিতে যুদ্ধবিমান তৈরির চেষ্টা করলেও প্রযুক্তিগতভাবে এগুলো ইজরায়েলি বিমানের চেয়ে পিছিয়ে। ইরানের নৌবাহিনী ছোট। কিন্তু তাতে দ্রুতগামী ছোট জাহাজ এবং সাবমেরিন আছে। পারস্য উপসাগরে যুদ্ধের জন্য যা উপযুক্ত। ইরানের সাইবার যুদ্ধের সক্ষমতাও উল্লেখযোগ্য। তবে এটি ইজরায়েলি সাইবার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সাথে মোকাবিলা করতে ততটা সক্ষম নয় বলে মনে করা হয়।

এদিকে ইজরায়েলের কাছে আধুনিক আমেরিকান এবং ইউরোপীয় অস্ত্র আছে। সেই দেশে মোট ১.৭ লক্ষ সক্রিয় এবং ৪ লক্ষ রিজার্ভ সেনা রয়েছে। ইজরায়েলি সেনারা বিভিন্ন ধরনের যুদ্ধ লড়তে অভিজ্ঞ। ইজরায়েলের রয়েছে অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যার মধ্যে রয়েছে আয়রন ডোম, ডেভিডস স্লিং ও অ্যারো-৩।ইজরায়েলকে পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে তারা নিজেরা কখনও বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। আইডিএফের শক্তি তার অত্যাধুনিক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতা। ইজরায়েলি সৈন্যরা প্রচলিত যুদ্ধের পাশাপাশি শহুরে যুদ্ধ, সাইবার যুদ্ধ এবং সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ নেয়।

ইজরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ এবং এর সামরিক গোয়েন্দা শাখা আমান বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী স্পাই এজেন্সি। ইজরায়েলের বিমান বাহিনীর কাছে এফ-১৫, এফ-১৬ এবং এফ-৩৫ স্টেলথের মতো ২৫০টিরও বেশি অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান আছে। ইজরায়েল তাদের ড্রোন প্রযুক্তিতেও প্রচুর বিনিয়োগ করেছে এবং এর সশস্ত্র ড্রোনগুলি (যেমন হার্মিস ৯০০) নির্ভুল হামলার জন্য পরিচিত। 

ইজরায়েলি নৌবাহিনী ছোট হলেও সাবমেরিন ও ক্ষেপণাস্ত্রবাহী রণতরী আছে তাদের কাছে। ভূমধ্যসাগর ও লোহিত সাগরে যা বেশ কার্যকর। ইজরায়েলের আয়রন ডোম সিস্টেম ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে সক্ষম। তবে তা সত্ত্বেও ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র সেই দেশে অনেক ক্ষতি করেছে। সম্প্রতি দক্ষিণ ইজরায়েলের সবচেয়ে বড় হাসপাতালেও আছড়ে পড়েছে ইরানি মিসাইল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *