ভারতে পাক গুপ্তচর চক্র নিয়ে তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই জটিল হচ্ছে বিষয়টি। ততই গুরুতর সব তথ্য সামনে চলে আসছে। এরই মধ্যে হরিয়ানার নুহ জেলা থেকেই এখনও পর্যন্ত দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে অন্যতম হল মহম্মদ তারিফ। এই তারিফ নিজে তো পাকিস্তানে গেছেই, সঙ্গে প্রায় ৩০ জনের ভিসা করিয়ে দিয়েছিল। এখন রিপোর্টে দাবি করা হচ্ছে, তারিফের কথাতেই হরিয়ানার সিরসায় ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে থাকতে পারে পাকিস্তান। এদিকে এই জেলা থেকেই আরমান নামে আরও এক পাক গুপ্তচর গ্রেফতার হয়েছে।
এই আরমান এবং তারিফ পাক হাইকমিশন কর্মীদের জন্যে সিম কার্ড কিনে দিয়েছিল। যে দোকান থেকে অভিযুক্তরা সিম কার্ড কিনেছিল, তার খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছেন গোয়েন্দারা। সেই দোকান শনাক্তকরণের পর সেখানকার রেকর্ড যাচাই-বাছাই করা হবে। সূত্রের খবর, তারিফ জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানিয়েছে, দিল্লির পাক দূতাবাসে কর্মরত আসিফ বালোচ ও জাফর তার সঙ্গে শুধু ভারতীয় সিম কার্ড নিয়ে কথা বলতেন, যাতে কেউ সন্দেহ না করেন। যাতে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর রাডার এড়ানো যায়।
এদিকে এর আগে সংঘাতের আবহে পাকিস্তান দাবি করেছিল, সিরসা বায়ুসেনা ঘাঁটি লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছিল। এবার জানা যাচ্ছে, তারিফের পাঠানো ইনপুটের ভিত্তিতেই ক্ষেপণাস্ত্র হামলার চেষ্টা করে থাকতে পারে পাক বাহিনী। তবে ভারতের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম সেই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ব্যর্থ করে দিয়েছিল। এই আবহে আগে থেকে তথ্য হাতে থেকেও ডাহা ফেল মুনিরের বাহিনী।উল্লেখ্য, তারিফ গ্রামেই একজন কোয়াক ডাক্তার। সূত্রের খবর, তারিফ পুলিশকে জানিয়েছেন, ২০১৮ সালে তিনি প্রথমবার ভিসার জন্য দিল্লিতে পাক হাই কমিশনে গিয়েছিলেন। ভিসার জন্য আবেদন করার পর এক পাকিস্তানি কর্মকর্তা তার সাক্ষাৎকার নেন। কয়েকদিনের মধ্যে কল আসবে বলে মোবাইল নম্বরও নেন তিনি।

সাক্ষাৎকারের তিন-চার দিন পর পাকিস্তান হাইকমিশনের এক কর্মকর্তার ফোন পান তিনি। ভিসা দেওয়ার পরিবর্তে দুটি সিম কার্ড আনতে বলেন তিনি। সিম কার্ড দেওয়ার পরই ভিসা দেওয়া হয়। তারিফ তার গ্রাম ও আশপাশের এলাকা থেকে দুটি সিম কার্ডের ব্যবস্থা করে পরদিন পাকিস্তান দূতাবাসে যান। সেখানে তিনি আসিফ বালোচ নামে এক পাকিস্তানি কর্মকর্তাকে দুটি সিম কার্ড দেন। এরপরই ওই কর্মকর্তা ভিসা ইস্যু করেন।
মহম্মদ তারিফ ২০১৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৩০ জনের বেশি মানুষকে পাক ভিসা পাইয়ে দিয়েছে। বিনিময়ে সে কমিশন পেত। ভিসার জন্য মাথাপিছু ১০ থেকে ১১ হাজার টাকা নিত তারিফ। এদিকে তারিফের গ্রেফতারের একটি ভিডিয়ো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে সে দাবি করছে, ২০১৮ সাল থেকে অর্থাৎ সাত বছর ধরে পাকিস্তানের হয়ে কাজ করছে সে। অভিযুক্ত যাঁদের ভিসা পাইয়ে দিয়েছিল, তাঁরাও গুপ্তচরবৃত্তির সঙ্গে যুক্ত কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।