ইসরোর নতুন উপগ্রহ প্রযুক্তি সমুদ্রে জেলেদের নিরাপত্তা জোরদার করবে

Spread the love

গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে জেলেদের জীবনের ঝুঁকি নিতে হয়। কখনও খারাপ আবহাওয়া, কখনও ট্রলার দুর্ঘটনা, কখনও দুর্ঘটনাক্রমে আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সীমানা অতিক্রম – এই ধরণের অনেক বিপদ প্রতিবারই জেলেদের সাথে আসে। এই বিপদগুলি কমাতে, ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) এখন স্যাটেলাইট-ভিত্তিক সামুদ্রিক নিরাপত্তা সহকারী সিস্টেম নামে একটি নতুন প্রযুক্তি তৈরি করেছে, যাকে সাধারণত ট্রান্সপন্ডার বলা হয়।

পশ্চিমবঙ্গের কাকদ্বীপ মহকুমায় এই প্রযুক্তিটি শুরু হয়েছে, যেখানে প্রাথমিক পর্যায়ে ৩০০টি ট্রলারে এই ডিভাইসটি স্থাপন করা হচ্ছে। মৎস্য বিভাগ অদূর ভবিষ্যতে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সমস্ত ট্রলারে এই ডিভাইসটি স্থাপনের পরিকল্পনা করছে।

এই ট্রান্সপন্ডার ডিভাইসটি কীভাবে কাজ করে?

এই ডিভাইসটি মোবাইল নেটওয়ার্কের উপর নির্ভর করে না, বরং সরাসরি স্যাটেলাইটের সাথে সংযুক্ত, যার ফলে জেলেরা সমুদ্রের যেকোনো প্রান্ত থেকে উপকূলীয় কর্তৃপক্ষের কাছে বার্তা পাঠাতে পারে। যদি কোনও ট্রলার দুর্ঘটনার শিকার হয়, কোনও জেলের স্বাস্থ্যের হঠাৎ অবনতি হয় বা ট্রলারে আগুন ধরে যায় – এই ধরনের প্রতিটি পরিস্থিতিতে, এই ডিভাইসটি জরুরি (SOS) বার্তা পাঠাতে সক্ষম।

এই যন্ত্রটি কেবল দুর্দশার সময়ে সাহায্য পাঠাতে সাহায্য করবে না, বরং কোন সমুদ্র অঞ্চলে মাছের আড্ডা আছে তা জেলেদেরও জানিয়ে দেবে। এছাড়াও, যদি কোনও ট্রলার ভুল করে ভারতীয় সমুদ্রসীমা অতিক্রম করে বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করে, তাহলে এই যন্ত্রটি সতর্কীকরণ সংকেত পাঠাবে এবং তাদের ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দেবে।

আগের তুলনায় উন্নত, দ্বিমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থা

ইসরো কর্তৃক তৈরি এই ডিভাইসটি পুরনো এককমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থার তুলনায় অনেক উন্নত। আগে কেবল উপকূলীয় কেন্দ্র থেকে ট্রলারে বার্তা পাঠানো যেত, কিন্তু এখন জেলেরা বার্তা পাঠাতে এবং গ্রহণ করতেও পারবেন। এর ফলে প্রশাসন এবং জেলেদের মধ্যে যোগাযোগ দ্রুত, স্পষ্ট এবং আরও কার্যকর হবে।

জেলেরা সঠিক নির্দেশ এবং নিরাপত্তা পাবেন

মৎস্য বিভাগের আধিকারিকরা এবং স্থানীয় জেলে সংগঠনগুলি এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছে। জেলেরা আরও বিশ্বাস করেন যে সমুদ্রে কাজ করার সময় এই প্রযুক্তি তাদের জীবন রক্ষাকারী হিসেবে প্রমাণিত হবে। সমুদ্রে মোবাইল কাজ করে না, এমন পরিস্থিতিতে এই ডিভাইসটি জেলেদের তীরের সাথে সংযুক্ত রাখবে এবং জীবন বাঁচাতে সাহায্য করবে।

এই প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা এবং মৎস্য বিভাগের উপ-পরিচালক সুরজিৎ বাগ বলেন, এই প্রযুক্তি কেবল কাকদ্বীপের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। পরিকল্পনা হল সমস্ত উপকূলীয় রাজ্যের ট্রলারে এই ডিভাইসটি স্থাপন করা, যাতে সারা দেশের জেলেরা এর সুবিধা পেতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *