গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওতে জঙ্গি হামলার পরপরই সবাই বুঝে গিয়েছিল ভারত এর জবাব দেবে। সেই মতো ৬-৭ মে-র মাঝামাঝি রাতে ভারতীয় সামরিক বাহিনী পাকিস্তানে ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছিল। সেই সামরিক সংঘর্ষে চিনা যুদ্ধবিমান থেকে শুরু করে চিনা ড্রোন এবং চিনা এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ব্যবহার করেছিল পাকিস্তান। এই আবহে ভারত-পাক সংঘর্ষে চিনা প্রত্যক্ষ মদতের বিষয়টি ছিল সুস্পষ্ট।
এই আবহে ভারত-পাকিস্তান সামরিক সংঘর্ষে চিনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করা হয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এই নিয়ে স্পষ্ট জবাব দিলেন তিনি। জার্মান সংবাদপত্র ফ্রাঙ্কফুর্টার অ্যালগেমাইন সাইটুংকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জয়শঙ্কর সুনির্দিষ্টভাবে নাম না করে বলেন, ‘পাকিস্তানের কাছে যেসব অস্ত্র ব্যবস্থা রয়েছে তার বেশিরভাগই চিনে তৈরি এবং দুই দেশ খুবই ঘনিষ্ঠ। এ থেকে আপনি আপনার উপসংহার টানতে পারেন।’
এদিকে অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সংঘাত পারমাণবিক উত্তেজনার পর্যায়ে পৌঁছেছিল কিনা, তা নিয়েও জয়শঙ্করকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। জবাবে বিদেশমন্ত্রী বলেন, ‘এই প্রশ্নে আমি অবাক। দক্ষিণ এশিয়ায় যাই ঘটুক না কেন, তার সঙ্গে পশ্চিমাদের পরমাণু সংকটের যোগসূত্র পেয়ে যায়।’ পরমাণু সংঘাত থেকে বিশ্ব কত দূরে, এমন প্রশ্নের জবাবে জয়শঙ্কর বলেন, ‘অনেক দূরে, অনেক দূরে।’
বিদেশমন্ত্রীর কথায়, ‘আমরা সন্ত্রাসীদের টার্গেট করেছিলাম। আমাদের অভিযান ছিল অত্যন্ত পরিমিত। খুবই সতর্ক ভাবে এমন পদক্ষেপ বিবেচনা করা হয়েছিল যাতে উত্তেজনা তৈরি না হয়। তা সত্ত্বেও পাকিস্তানি মিলিটারিরা আমাদের ওপর গুলি চালায়। তারপর আমরা তাদের দেখাতে সক্ষম হয়েছি যে আমরা তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অক্ষম করতে পারি। এরপর তাদের অনুরোধে গোলাগুলি বন্ধ হয়।’

সংঘর্ষবিরতির জন্যে কি আমেরিকাকে ধন্যবাদ জানানো উচিত? এই নিয়ে জয়শঙ্কর বলেন, ‘উভয় পক্ষের সামরিক কমান্ডারদের মধ্যে সরাসরি কথাবার্তা হয়েছিল। তারপর গোলাগুলি বন্ধে সম্মত হয়েছিল দু’পক্ষই। আগের দিন সকালে আমরা পাকিস্তানের প্রধান বিমানঘাঁটি ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আঘাত হেনেছিলাম এবং সেগুলি অকেজো করে দিয়েছিলাম। সুতরাং, সংঘাত বন্ধের জন্য আমি কাকে ধন্যবাদ জানাব? আমি ভারতীয় সামরিক বাহিনীকে ধন্যবাদ জানাই কারণ ভারতের সামরিক পদক্ষেপের কারণেই পাকিস্তান বলেছিল যে, আমরা থামাতে প্রস্তুত।’