তথ্য বলছে, শেষবার ২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি মণিপুরের মাটিতে পা রেখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এরপর ২০২৩ সালের মে মাসে ভয়াবহ জাতি দাঙ্গার আগুনে জ্বলে ওঠে উত্তর পূর্বের রাজ্য মণিপুর। শতাধিক মৃত্যুর খবর উঠে আসে। বারবার বিরোধীদের তোপের মুখে পড়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার। প্রশ্ন ওঠে, কবে মণিপুরে পা রাখবেন দেশের প্রধানমন্ত্রী? বেশ কিছু রিপোর্ট দাবি করছে, খুব শিগগিরই সম্ভবত মণিপুরের সফরে যেতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
মণিপুরের পাহাড়ি এলাকায় কুকি ও উপত্যকা জুড়ে মেইতেই, এই দুই গোষ্ঠীর সংঘাতে তপ্ত হয়ে ওঠে মণিপুর। একটা সময়ের পর ২০২৫ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি সেরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন বিজেপির এন বীরেন সিং। মণিপুরে শুরু হয় রাষ্ট্রপতি শাসন। তারই মাঝে কিছুদিন আগেই মণিপুরে এক গুলি চালনা কাণ্ডে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত কয়েক মাস ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক কুকি জো গোষ্ঠী ও মেইতেইদের সঙ্গে পর পর বৈঠক করছে। আজ শুক্রবারও কুকি-জো গোষ্ঠীর সঙ্গে রয়েছে সরকারের বৈঠক। পর পর বৈঠকের হাত ধরে মণিপুরে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরানোর উদ্যোগে রয়েছে কেন্দ্র।
এর আগে, মেইতেই গোষ্ঠীর সঙ্গে বৈঠকে বসে সরকার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের উদ্যোগ, যাতে মণিপুরে সুষ্ঠুভাবে মানুষের চলাচল সম্ভব হয়, সঙ্গে পণ্য চলাচল স্বাভাবিক করতেও উদ্যোগী কেন্দ্র। এরই মধ্যে জানা যাচ্ছে, সম্ভবত জুলাই মাসেই মণিপুরের সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নয়া দিল্লির এক বিজেপি সদস্য বলেন,’ প্রধানমন্ত্রীর মণিপুর সফরের সম্ভাবনা রয়েছে এবং এটি পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এখনও কোনও তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি।”
এদিকে, মণিপুরের এক সিনিয়র অফিসার বলছেন, যাবতীয় পরিকাঠামোগত প্রকল্প শেষ করার নির্দেশ রয়েছে সকলের কাছে। তিনি বলছেন,’ জুলাই মাসের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সপ্তাহে’ নরেন্দ্র মোদী মণিপুরে যেতে পারেন। তিনি বলছেন,’ কোনও কিছুই আনুষ্ঠানিক বা কাগজে কলমে নেই। ইম্ফল উপত্যকার দুটি স্থানে এবং চুরাচাঁদপুরে আরেকটি স্থানে বিদ্যমান কার্যকরী হেলিপ্যাডগুলির সংস্কার কাজ চলছে। যদি প্রধানমন্ত্রী মণিপুরে আসেন, তাহলে তিনি উপত্যকা থেকে পাহাড়ে হেলিকপ্টার নিয়ে যাবেন।’

ওই অফিসার বলছেন,’নতুন সচিবালয় ভবন এবং মন্ত্রিপুকরিতে মণিপুর পুলিশ সদর দপ্তরের মুলতুবি কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে। এছাড়াও উপত্যকার মধ্যে এবং চুরাচাঁদপুরের সমস্ত রাস্তা মেরামত করা হচ্ছে।’ মণিপুরের এক বিজেপি নেতাও এই সফরের সম্ভাবনার কথা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটা সত্যি যে আমাদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।’ ওই বিজেপি নেতা বলছেন,’এটা সম্ভব যে তিনি বাদল অধিবেশনের আগে আসতে পারেন, কিন্তু এখনও পর্যন্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বৈঠক থেকে কোনও উল্লেখযোগ্যভাবে কিছু জানা যায়নি।” মনে করা হচ্ছে, যদি প্রধানমন্ত্রী সফর করেন, তাহলে মোদীর সফরের আগে আজ শুক্রবারের বৈঠক বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। বিজেপির ওই নেতা মনে করছেন, যদি মোদী সফর করেন, তাহলে,’সরকার কিছু ইতিবাচক দিক চাইবে’। সব মিলিয়ে আপাতত এই সফরের সম্ভাবনা নিয়ে চর্চা চরমে। যদিও কেন্দ্রের তরফে এই নিয়ে মুখ খোলা হয়নি। এদিকে, ৮ দিনে ৫ দেশের সফরে গিয়েছেন মোদী। আজ তিনি পৌঁছেছেন ত্রিনিদাদ ও তোবাগোতে।