হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন আগেই। এবার তা করে দেখালেন। বুধবার থেকেই আমরণ অনশন শুরু করলেন মমতাবালা ঠাকুরের মতুয়া অনুগামীরা। রাজ্যসভার সাংসদ এই দিন সকালে ফেসবুকে একটি পোস্টও করেন এর পরিপ্রেক্ষিতে। রবিবার ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়িতে একটি বৈঠক হয় এসআইআর প্রক্রিয়া নিয়ে। মমতাবালার নেতৃত্বে সেই বৈঠকে দুটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। তার মধ্যে একটি ছিল কীভাবে এসআইআর প্রক্রিয়ার মোকাবিলা করা যায়। দ্বিতীয়টি ছিল, প্রয়োজনে কতদূর আন্দোলন নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। ওই বৈঠকেই আমরণ অনশনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত মেনে বুধবার থেকে অনশন শুরু করলেন মতুয়া অনুগামীরা।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়েও প্রতিবাদ
প্রসঙ্গত, এসআইআর-এর পাশাপাশি নয়া সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়েও দেখা দিয়েছে সমস্যা। এই আইন মোতাবেক মতুয়াদের এই দেশে নাগরিক হিসেবে বসবাস নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এই অবস্থায় সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা দায়ের করেছেন মমতাবালা ঠাকুর। বুধবার এসআইআর-র পাশাপাশি সেই আইনের বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ অনশন শুরু করলেন তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের মতুয়া অনুগামীরা।
ফেসবুক পেজে বিশেষ বার্তা
প্রসঙ্গত বুধবার সকালেই মমতাবালা ঠাকুর তাঁর ফেসবুক পেজে লেখেন, ‘বাংলাদেশি ঘোষণা ও বাংলাদেশি কাগজ দিয়ে নাগরিকত্ব নয়, ২০২৪ সাল পর্যন্ত ভারতবর্ষে স্থায়ী ভাবে বসবাসকারী মতুয়া-সহ দেশভাগের বলি ছিন্নমূল উদ্বাস্তু মানুষদের নতুন আইন প্রণয়ন করে নিঃশর্ত নাগরিকত্ব দিতে হবে।’ তাঁর কথায়, ‘এসআইআরের নাম করে ভারতবর্ষে স্থায়ী ভাবে বসবাসকারী মতুয়া-সহ দেশভাগের বলি ছিন্নমূল উদ্বাস্তু মানুষদের ভোটের অধিকার বাতিলের চক্রান্তের প্রতিবাদে ঠাকুরনগর ঠাকুরবাড়িতে সাধু, গোঁসাই, পাগল ও মতুয়া ভক্তদের আমরণ অনশন আজ থেকে।’

মতুয়াদের ভাগাভাগিতে আখেরে কাদের লাভ?
তবে এই আন্দোলন আগামী ভোটে তৃণমূল ও বিজেপির ভোটের সমীকরণও ঠিক করে দিতে পারে বলে আশঙ্কা রাজনৈতিক মহলের। গত বেশ কিছু নির্বাচনে মতুয়াদের ভোট অনেকটাই পেয়েছে বিজেপি। আবার এই আবহে মতুয়াদের ভোট বড় শক্তি হতে চলেছে তৃণমূলের জন্য। রাজনৈতিক মহলের একাংশের কথায়, তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ মমতাবালার মতুয়া অনুগামীদের অনশন আদতে ছলেবলে তৃণমূলকেই আগামী ভোটে শক্তি জোগাবে। তবে অন্যদিকে বিজেপি বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর ও বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের নেতৃত্বেও একজোট হচ্ছেন মতুয়ারা। শান্তুনু কিছু দিন আগেই পরামর্শ দেন সিএএ-র মাধ্যমে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করার। মতুয়াদের এই ভাগাভাগি আখেরে কার জন্য লাভজনক হয়, সেটা ভোটেই বোঝা যাবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের অনেকে।