মঙ্গলবার জি-৭ নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি। ২০ মাসেরও বেশি সময় ধরে দুই দেশের মধ্যে অস্থিরতা ছিল। তবে এবার ফের সম্পর্ক পুনর্নবীকরণে সম্মত হয়েছেন দুই রাষ্ট্রপ্রধানই। উভয় দেশই একে অপরের রাজধানীতে হাইকমিশনার পুনর্নিয়োগে সম্মত হয়েছে।
এই নিয়ে মোদী বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর কার্নি বলেন, দুই দেশ একসঙ্গে যেসব বিষয় মোকাবিলা করবে তার মধ্যে রয়েছে ‘আন্তঃদেশীয় সন্ত্রাসবাদ’। এই বৈঠককে ‘চমৎকার’ ছিল বলে দাবি করেছেন মোদী। তাঁর কথায়, ‘কানাডার প্রধানমন্ত্রী কার্নি এবং আমি ভারত-কানাডা বন্ধুত্বকে আরও গতিশীল করতে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার অপেক্ষায় রয়েছি।’
আর এক বিবৃতিতে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বলেছে, ‘পারস্পরিক শ্রদ্ধা, আইনের শাসন এবং সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার নীতির প্রতি অঙ্গীকারের ভিত্তিতে কানাডা-ভারত সম্পর্কের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।’ উল্লেখ্য, কানাডিয়ান রকিজের একটি রিসোর্ট কানানাস্কিসে শীর্ষ সম্মেলনে মোদীকে স্বাগত জানিয়ে কার্নি বলেন, এটা তাঁর কাছে ‘দুর্দান্ত সম্মান’। কানাডার প্রধানমন্ত্রী মোদীর উদ্দেশে বলেন, ‘২০১৮ সাল থেকে ভারত জি-৭ এ আসছে। এটা আপনার দেশের, আপনার নেতৃত্বের গুরুত্বের একটি প্রমাণ।’ এদিকে ভারত-কানাডা পার্টনারশিপ নিয়ে তিনি বলেন, ‘দুই দেশ জ্বালানি নিরাপত্তা থেকে শুরু করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যত পর্যন্ত বিভিন্ন খাতে সহযোগিতার দিকে নজর দিচ্ছে।’

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের অক্টোবরের পর থেকে ভারত এবং কানাডার কোনও দেশের রাজধানীতেই একে অপরের হাইকমিশনার নেই। এর আগে নিজ্জর কাণ্ডের পরে অটোয়া ভারতের কয়েকজন কূটনীতিককে দেশ ছাড়তে বলেছিল। এই আবহে ভারত তৎকালীন হাই কমিশনার সঞ্জয় কুমার ভার্মা এবং আরও পাঁচ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করেছিল। এরই সঙ্গে ভারতে থাকা কানাডার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার ছয় কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করেছিল।
মূলত কানাডায় থাকা খলিস্তানি লবির চাপে এবং শিখ ভোটব্যাঙ্কের জন্যই কানাডার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করেছিলেন। ভারতের বিরুদ্ধে প্রমাণ না দিয়েই তিনি নিজ্জর হত্যার দায় দিল্লির ওপর চাপিয়েছিলেন। তবে মার্ক কার্নি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতে আগ্রহী কানাডা। এই আবহে দীর্ঘ ২০ মাসের টানাপোড়েনের পরে ভারত-কানাডা সম্পর্ক জোড়া লাগার ইঙ্গিত মিলল। উল্লেখ্য, নিজ্জর কাণ্ডে ট্রুডোর সেই সব দাবি করার আগে একটা সময়ে ভারত-কানাডা সম্পর্ক বেশ মধুর ছিল। তবে গত দেড় বছরে তাতে তিক্ততা বেড়েছিল।