OMG। পিন ঢুকে চুপসে গিয়েছিল ফুসফুস

Spread the love

বছর এগারোর কিশোরের কাশি-বুকে ব‌্যথা।
বাড়ির লোক ভেবেছিল বৃষ্টি ভিজে ঠাণ্ডা লেগেছে। চেস্ট এক্স রে করতেই চক্ষু ছানাবড়া! বুকের বাঁদিকে ফুসফুসের আটকে আস্ত একটা বোর্ডপিন। এমন ভাবে তা সেঁটে বের করতে গেলেই খোঁচা লেগে রক্ত বেরচ্ছে ফুসফুস থেকে। মাথার ঘাম পায়ে ফেলার জোগাড়। যমে চিকিৎসকে টানাটানিতে শেষমেশ জয়ী কলকাতা মেডিক‌্যাল কলেজের ইএনটি বিভাগের ডাক্তারবাবুরা। নতুন জীবন পেল উত্তর ২৪ পরগণার স্বরূপনগরের বাসিন্দা বছর এগারোর কিশোর অঙ্কন বিশ্বাস।

অঙ্কনের বাবা গৌতম বিশ্বাস, মা সাধনাদেবী জানিয়েছেন, গত ৩-৪ দিন ধরে ছেলের বুকের বাঁদিকে ব‌্যথা। সঙ্গে খুশখুশে কাশি-হালকা শ্বাসকষ্ট। হয়েছে টা কী? শনিবার তাঁকে বাড়ির কাছের ডাক্তারবাবুর কাছে নিয়ে যায় মা-বাবা। সেখান থেকে ওষুধ নিয়ে খাওয়ানো হয়। তাতে ব‌্যথা শ্বাসকষ্ট কমেনি বিন্দুমাত্র। সোমবার অঙ্কনকে নিয়ে যাওয়া হয় বসিরহাট সরকারি হাসপাতালে। সেখানেই বুকের এক্স রে করে দেখা যায় পিনের মতো কিছু একটা বিঁধে রয়েছে বুকে। বামদিকের শ্বাসনালী জিনিসটা কষে আটকে রয়েছে। দ্রুত কিশোরকে পাঠানো হয় কলকাতা মেডিক‌্যাল কলেজে। সোমবার ভোর সাড়ে তিনটেয় অঙ্কনকে নিয়ে কলকাতা মেডিক‌্যালে আসেন তার অভিভাবকরা। ইএনটি বিভাগের সহযোগী অধ‌্যাপক ডা. দীপ্তাংশু মুখোপাধ‌্যায় জানিয়েছেন, “অভিভাবকরা যখন হাসপাতালে নিয়ে আসেন তখন প্রবল শ্বাসকষ্ট ছিল অঙ্কনের। সঙ্গে একটানা কাশি। আমরা দ্রুত একটা সিটি স্ক‌্যান করি। সেখানে দেখা যায় বাঁ দিকের শ্বাসনালীতে ধাতব পিন ঢুকে।”

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অনেকদিন ধরে পিন ঢুকে থাকায় স্বাভাবিকভাবে ফোলা-বন্ধ হতে পারেনি ফুসফুস। সেইজন‌্যই চুপসে গিয়েছিল তা। ইএনটি টিম বুঝতে পারে দ্রুত অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। দেরি করেননি তাঁরা। সে টিমে ছিলেন নাক কান গলা বিভাগের সহযোগী অধ‌্যাপক ডা. দীপ্তাংশু মুখোপাধ‌্যায়, সহকারী অধ‌্যাপক ডা. বিজন অধিকারী, ডা. তনয়া পাঁজা এবং পিজিটি ডা. শুভ্রজ্যোতি নস্কর। রিজিড ব্রঙ্কোস্কপির মাধ‌্যমে বের করে আনা হয় ওই বোর্ড পিন। ২.৫ সেমি লম্বা ওই বোর্ডপিনটা এমন জটিল জায়গায় আটকে ছিল তা বের করতে প্রায় ঘন্টা দুয়েক সময় লাগে। ডা. শুভ্রজ্যোতি নস্কর জানিয়েছেন, বাচ্চাটির ফুসফুস বেশ কয়েকদিন স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারেনি। পিনটি বের করার সময় একটু ক্ষত হয়েছে ফুসফুসে। আপাতত তাকে পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে রাখা হয়েছে। তবে কিভাবে এগারো বছরের কিশোরের ফুসফুসে বোর্ড পিন গেল তা এখনও রহস‌্য। অঙ্কনের মা-বাবা জানিয়েছেন, এই বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *