পহেলগাঁও সন্ত্রাসী হামলার একদিন পর নয়াদিল্লি যে সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করার ঘোষণা করেছিল, তা পুনর্বহালের জন্য সোমবার ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তান বলেছে, হেগের স্থায়ী সালিশি আদালতের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত প্রমাণ করে যে চুক্তিটি এখনও ‘বৈধ এবং কার্যকরকার্যকর’ রয়েছে।
সোমবার জারি করা এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রণালয় বলেছে, ২৭ জুন সালিশি আদালতের ঘোষিত রায় ‘পাকিস্তানের অবস্থানকে সঠিক প্রমাণিত করে’। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা ভারতকে অবিলম্বে সিন্ধু জল চুক্তির স্বাভাবিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার আহ্বান জানাচ্ছি। এবং চুক্তির বাধ্যবাধকতা পূর্ণ ও বিশ্বস্ততার সাথে পূরণ করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
পৃথক এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও বিদেশমন্ত্রী ইশাক দার বলেছেন, সালিশি আদালতের সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করেছে যে সিন্ধু জল চুক্তি পুরোপুরি বৈধ। সোমবার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘এক্স’-এ এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘কিষাণগঙ্গা-রাতলে মামলায় এক্তিয়ার নিশ্চিত করে কোর্ট অফ আরবিট্রেশনের যে রায় দিয়েছে, তাকে পাকিস্তান স্বাগত জানাচ্ছে। এই সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করে যে সিন্ধু জল চুক্তি সম্পূর্ণরূপে বৈধ। ভারত একতরফাভাবে তা স্থগিত করতে পারে না। দেশগুলি আন্তর্জাতিক চুক্তির প্রতি তাদের আনুগত্য দ্বারা পরিমাপ করা হয়। আক্ষরিক ও চেতনায় সিন্ধু জলচুক্তি সমুন্নত রাখতে হবে।’
সিন্ধু জল চুক্তির বিধান অনুসারে ২০১৬ সালে ৩৩০ মেগাওয়াট কিষাণগঙ্গা এবং ৮৫০ মেগাওয়াট রাতলে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্দিষ্ট নকশার বিষয়ে আপত্তি উত্থাপন করেছিল পাকিস্তান। এই নিয়ে তারা আন্তর্জাতিক আদালতে গিয়েছিল। তবে ভারতীয় পক্ষ কখনওই স্থায়ী সালিশি আদালতের সেই কার্যক্রমে অংশ নেয়নি।

এই আবহে সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত হওয়ার পরে পাকিস্তানের দায়ের করা মামলাটি গ্রহণ করা যায় কি না, তা নিয়ে বিবেচনা করে কোর্ট অফ আরবিট্রেশন। এরপর সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে আদালত রায় দিয়ে জানিয়েছে যে ভারত চুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিলেও এই মামলার পরিসর ‘সীমাবদ্ধ হচ্ছে না’। এরই সঙ্গে জানানো হয়, এই রায়টি ‘সব পক্ষের জন্য বাধ্যতামূলক এবং এতে আপিল করা যাবে না’।এরপর পরই ভারতের বিদেশ মন্ত্রক কোর্ট অফ আরবিট্রেশনের বৈধতাকেই স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। সঙ্গে ‘সেই সংস্থার সমস্ত পূর্ববর্তী ঘোষণাও প্রত্যাখ্যান করেছে’ ভারত। এরই সঙ্গে ভারত জানায়, সিন্ধু জল চুক্তি যেই ভিত্তিতে করা হয়েছিল, তা পুরোপুরি লঙ্ঘন করা হয়েছে। এদিকে কোর্ট অফ আরবিট্রেশনের সর্বশেষ রায়কে ‘পাকিস্তানের নির্দেশে ভাঁওতাবাজি’ হিসেবে বর্ণনা করেছে ভারত।