জারি একের পর এক নোটাম। আবার পরপর ইঙ্গিতবহ মন্তব্য ভারতীয় সেনাপ্রধান থেকে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর। এই আবহে অনেকেরই মনে প্রশ্ন জেগেছে, ‘কিছু’ কি হবে? এরই মাঝে পাকিস্তান কি নিজেরাই কোনও ‘ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশনের’ পরিকল্পনা করছে? নাকি ভারতে জঙ্গি হামলা চালিয়ে তারা অভিযোগ করবে, ভারত ‘ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন’ করেছে? এই প্রশ্ন উঠছে কারণ, এর আগেও পহেলগাঁওয়ের সময় পাকিস্তান এই দাবি করেছিল প্রাথমিক ভাবে। আর এখন এক পাকিস্তানি মৎস্যজীবীকেই ধরে পাক তথ্য মন্ত্রী দাবি করলেন, তারা নাকি এক ভারতীয় গুপ্তচরকে ধরে বিশাল সাফল্য অর্জন করেছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, পাক তথ্য মন্ত্রী আতাউল্লাহ তরার একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে দাবি করেন, ভারতীয় ইন্টেলিজেন্সের হয়ে কাজ করা পাকিস্তানি এক মৎস্যজীবীকে ধরেছে তারা। ধৃতের নাম ইজাজ মল্লাহ। এদিকে উল্লেখ্য বিষয়, এক তথাকথিত স্পাইকে ধরার বিষয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করছেন খোদ মন্ত্রী! প্রসঙ্গত, ভারতে কিছুদিন পরপরই পাক গুপ্তচর ধরা পড়ে। পাকিস্তানও অনেক ‘স্পাই’ ধরে। তবে মন্ত্রী এসে সেই বিষয়ে ঘোষণা করেন না। তাঁর অভিযোগ ছিল, এই ইজাজকে নাকি কয়েক মাস আগে ভারতীয় উপকূল বাহিনী ধরেছিল সমুদ্রে। তারপর তাঁকে গুপ্তচরবৃত্তির টোপ দিয়ে ছেড়ে দেয়।
উল্লেখ্য, এই আতাউল্লাহ অপারেশন সিঁদুরের সময় সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে ভুয়ো খবর ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য রীতিমতো পাক নেটিজেন বাহিনী গড়ে তুলেছিলেন। অফিস খুলে সংঘাত নিয়ে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছিলেন। এই করণেই সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের ‘জয়ী’ মনে করে পাকিস্তানিরা। প্রকৃতপক্ষে নিজের দেশের মানুষজনকেই বোকা বানিয়েছেন আতাউল্লাহ। কারণ পরবর্তীতে বাকি বিশ্বের কাছেও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে সংঘাতে কেউ জিতে থাকলে, সেটা কোন দেশ।
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিরা ধর্ম জিজ্ঞেস করে ২৫ জন পর্যটক এবং এক স্থানীয়কে খুন করে। এর জবাবে ভারত ৬ মে গভীর রাতে বাহাওয়ালপুর, মুরিদকে সহ পাকিস্তানের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করে দেয়। সেই অভিযানে প্রায় ১০০ জনের জঙ্গিকে খতম করে ভারত। আর এরপর থেকেই পাকিস্তানের তরফ থেকে শেলিং শুরু হয় ভারতের ওপর। অপারেশন সিঁদুর পরবর্তী সময়ে পাকিস্তানের শেলিংয়ে ভারতের অন্তত ১৬ জন নাগরিকের মৃত্যু ঘটে। এরপর সংঘাত বাড়তে থাকে দুই দেশের। ১০ মে-র ভোররাতে এরপর ভারতীয় বায়ুসেনা হামলা চালিয়ে পাকিস্তানের ১১টি সামরিক ঘাঁটি অকেজো করে দেয়।

পাকিস্তানের এফ-১৬ এবং জেএফ-১৭ শ্রেণির যুদ্ধবিমান সহ পাঁচটি জেট ভারত ধ্বংস করেছিল লড়াইয়ের সময়। পাকিস্তানের রাডার, কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার, হ্যাঙ্গার এবং রানওয়ে ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ভারতের হামলায়। এছাড়া পাক ঘাঁটিতে হামলার সময় হ্যাঙ্গারে থাকা একাধিক এফ-১৬ যুদ্ধবিমানও ধ্বংস হয়েছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ৩০০ কিলোমিটারেরও বেশি দূরত্বে একটি AEW&C বা একটি SIGINT বিমান ধ্বংস করেছিল ভারতীয় বায়ুসেনা।