দেশভাগের সময় ভারত থেকে বহু মুসলিম পাকিস্তানে গিয়েছিলেন। তাদেরকে পাকিস্তানিরা ‘মুহাজির’ বলে ডাকে। সেই মুজাহিরদের জন্যে সিন্ধু প্রদেশে একটি রাজনৈতিক দল গড়েছিলেন আলতাফ হুসেন। দলের নাম – মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট। ২০১৫ সাল থেকে পাকিস্তানি সেনার অত্যাচারের আগে পর্যন্ত পাক রাজনীতিতে বেশ প্রভাব ছিল এই দলের। সেই দলের প্রতিষ্ঠাতা আলতাফ হুসেন এবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা আলতাফ হুসেন সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভে এসে মোদীর প্রশংসা করেছেন। মোদীর কাছে আবেদন করেন, ভারত থেকে আসা মুহাজিরদের নির্যাতন করে পাক সেনাবাহিনী। তাদের এখনও পাকিস্তানি হিসেবে গণ্য করা হয় না। ওই মুহাজিরদের বাঁচানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদীর কাছে আবেদন জানান তিনি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় আলতাফ বলেন, ‘কিছু সংবাদমাধ্যম তাঁর ভাষণের ভুল মানে বের করেছে। আমি প্রধানমন্ত্রী মোদীকে কোনও চিঠি পাঠাননি, তবে প্রশংসা করেছি এবং আবেগঘন আবেদন জানিয়েছি।’ আলতাফের মতে, বালোচ জনগণের প্রতি নমনীয় মনোভাব আছে প্রধানমন্ত্রী মোদীর। এটা মোদীর নৈতিকতার পরিচয় দেয়। এই আবহে তিনি ভারত থেকে পাকিস্তানে যাওয়া মুহাজিরদের উপর অত্যাচারের কথাও উল্লেখ করেছিলেন মোদীকে উদ্দেশ্য করে।
আলতাফ বলেন, পাকিস্তানের সামরিক এস্টাবলিশমেন্ট এই মুহাজির এবং তাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে পাকিস্তানি হিসেবে মেনে নিতে পারে না। শুধু তাই নয়, মুহাজিরদের রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধেও বেশ কয়েকবার সামরিক পদক্ষেপও নিয়েছে সেনা। তিনি অভিযোগ করেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অভিযানে ২৫ হাজারেরও বেশি মুহাজির যুবক নিহত হয়েছে। আলতাফ হুসেন বলেন, গত ৬১ বছর ধরে মোহাজিররা শিক্ষাগত, অর্থনৈতিক ও শারীরিক শোষণের শিকার হচ্ছে এবং পাকিস্তানে তাদের কথা শোনার মতো কেউ নেই।

তাৎপর্যপূর্ণভাবে, দেশভাগের সময় লক্ষ লক্ষ মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে নতুন জীবন শুরু করেছিলেন। পাকিস্তানে যাওয়া এই ভারতীয় মুসলমানরা আশা করেছিলেন যে তারা সেখানে সম্মান ও সাম্য পাবেন। কিন্তু দশকের পর দশক পরেও তারা তাদের অধিকারের জন্য লড়াই করছেন। এরা উর্দুভাষী মানুষ এবং পাকিস্তানে সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছেন। তাদের অধিকাংশই পাকিস্তানের শহরাঞ্চলে, বিশেষ করে করাচি, লাহোরে থাকেন।