প্রতিবেশি দুই দেশ হলেও ভারত এবং পাকিস্তানের সম্পর্ক বরাবরই উত্তপ্ত থেকেছে গত কয়েক দশক ধরে। কার্গিল যুদ্ধের পর কয়েক বছরের জন্য ভারত-পাকিস্তান বন্ধুত্ব হয়েছিল প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী এবং পাকিস্তানের পারভেজ মুশারফের সৌজন্যে। তবে তারপর থেকেই ফের শুরু ভারত-পাকিস্তান শত্রুতার। আসিফ আলি জারদারি থেকে গিলানি, ইমরান খান, পাকিস্তানের শীর্ষপদে এসে বারবার ভারতকে রক্তাক্ত করায় মদৎ জুগিয়েছেন তাঁরা।
তবে অলিম্পিক্সের মঞ্চে সেই শত্রুতা ভুলে ভ্রাতৃত্বেরই বার্তা দিয়েছেন পাকিস্তানের জ্যাভলিন থ্রোয়ার আরশাদ নাদিম এবং ভারতের নীরজ চোপড়া। আর্শাদের মা পরভীন রাজিয়া এবং নীরজের মা সরোজ দেবী, দুজনেই প্রতিপক্ষ দেশের জ্যাভলিন থ্রোয়ারকেই নিজের সন্তানসম বলে আখ্যা দিয়েছেন, জানিয়েছেন শুভেচ্ছাও।
প্যারিস অলিম্পিক্সে ৯২.৯৭ মিটার দূরত্বে জ্যাভলিন থ্রো করে স্বর্ণপদক জিতেছেন পাকিস্তানের আরশাদ নাদিম, ভারতীয় নীরজ গতবার টোকিয়ো অলিম্পিক্সে সোনা জিতলেও এবার তিনি ছোঁড়েন ৮৯.৪৫ মিটার দূরত্বে, সেই সুবাদে অর্জন করেন রৌপ্য পদক। এরপর দুই বন্ধুই পাশাপাশি দাঁড়িয়ে বললেন, নিজের দেশের জন্য ভবিষ্যৎেও সেরাটা দিতে চান, একে অপরকে ভাসালেন শ্রদ্ধা, ভালোবাসায়।
অলিম্পিক্সে রেকর্ড গড়ে আরশাদ নাদিম বলেন, ‘আমার খুব ভালো লাগছে যে প্যারিস অলিম্পিক্সে সাউথ এশিয়ার ভারত এবং পাকিস্তান এত ভালো পারফর্ম করেছে। গোটা বিশ্বের সঙ্গে আমরা দুজন প্রতিদ্বন্দিতা করে পদক জিতেছি, আমার কাছে রুপোর পদকটাও সোনারই মতো। কারণ আমাদের বন্ধুত্ব খুব ভালো, আমি চাইব আমাদের বন্ধুত্ব দীর্ঘদিন থাকুক, এভাবেই দেশের নাম উজ্জ্বল করার চেষ্টা করব ’।
ভারতের হয়ে টোকিয়ো অলিম্পিক্সে সোনা জয়ের পর প্যারিস অলিম্পিক্সে রৌপ্য পদক এনে দিয়ে নীরজ চোপড়া বলেন, ‘আমার সঙ্গে ওর খুব ভালো স্বাস্থ্যকর লড়াই ছিল। আর্শাদ কালকে খুব ভালো থ্রো করেছিল, অলিম্পিক্সে রেকর্ডও করেছে। ওকে অনেক শুভেচ্ছা। এভাবেই প্রতিযোগিতা চলতে থাকুক, আমরাও চেষ্টা করতে থাকব। দুজনেই চাইব নিজের নিজের দেশে যাতে জ্যাভলিন থ্রোয়ের প্রতি মানুষের ঝোঁক বাড়ে, বাচ্চা যাতে এই খেলার প্রতি আকর্ষিত হয়ে এগিয়ে আসে আর আমাদের জয় দেখে মোটিভেট হয় ’। একঝলকে সেই সাক্ষাৎকারের ভিডিয়ো।