মঙ্গলবার বিএসএফ জানিয়েছে, অপারেশন সিঁদুরের পর ৩ সপ্তাহ যেতে না যেতেই পাক অধিকৃত কাশ্মীরে অবস্থিত জঙ্গিদের লঞ্চপ্যাড ও প্রশিক্ষণ শিবিরগুলিতে ফের ফিরে আসছে জঙ্গিরা। বিএসএফের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজি) শশাঙ্ক আনন্দ সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন যে নিয়ন্ত্রণ রেখা এবং আন্তর্জাতিক সীমান্ত উভয় জায়গা থেকেই সন্ত্রাসবাদীদের অনুপ্রবেশের সম্ভাবনার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। এই বিষয়ে সতর্ক হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বিএসএফ আইজি শশাঙ্ক আনন্দ বলেন, ‘আমরা ক্রমাগত তথ্য পাচ্ছি যে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলি সক্রিয় হচ্ছে। তারা তাদের শিবিরে ফিরে এসেছে, প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। তারা এমন রুট দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করবে যেখানে তারা মনে করে যে নিরাপত্তা কম।’ তিনি আরও বলেন, ‘জম্মু ও কাশ্মীর উভয় অঞ্চলে এলওসি এবং আন্তর্জাতিক সীমান্ত সম্পর্কে গোয়েন্দা সংস্থাগুলির কাছ থেকে ক্রমাগত ইনপুট আসছে। তাই প্রতিটি অঞ্চলে সুরক্ষা বাহিনীকে সতর্ক থাকতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ৭ মে যখন অপারেশন সিঁদুর শুরু হয়, তখন আশঙ্কা করা হয়েছিল যে পাকিস্তান পাল্টা গুলি চালাবে। এই আশঙ্কার কথা মাথায় রেখেই জম্মুর আন্তর্জাতিক সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়িয়েছে বিএসএফ। পাকিস্তান বিনা প্ররোচনায় গুলি চালালে বিএসএফ যোগ্য জবাব দেয়। সেই অপারেশনের সময় আমরাও পাকিস্তানের তিনটি সন্ত্রাসী লঞ্চপ্যাড ধ্বংস করেছিলাম।
জম্মু ফ্রন্টিয়ারের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজি) শশাঙ্ক আনন্দ বলেছেন, গোয়েন্দা তথ্য নিশ্চিত করেছে যে বেশ কয়েকটি লঞ্চ প্যাড ধ্বংস হয়েছে এবং অনেক সন্ত্রাসী ও পাকিস্তানি রেঞ্জার্স নির্ভুল হামলায় নিহত হয়েছে। আইজিপি বলেন, ৯-১০ মে মধ্যবর্তী রাতে সীমান্তের ওপারে লস্কর-ই-তৈবার একটি লঞ্চ প্যাড একটি বিশেষ অস্ত্র সিস্টেম ব্যবহার করে ধ্বংস করা হয়েছিল।

বিএসএফ আধিকারিক জানিয়েছেন, ৪০-৫০ জন জঙ্গিকে ভারতে ঠেলে দেওয়ার লক্ষ্যে ৬০টি ভারতীয় পোস্ট এবং ৪৯টি ফরওয়ার্ড ডিফেন্স পোজিশন লক্ষ্য করে পাকিস্তান ভারী গুলি ও বোমাবর্ষণ শুরু করেছিল অপারেশন সিঁদুরের সময়। জবাবে বিএসএফ তাদের ৭৬টি পোস্ট ও ৪২টি ফরোয়ার্ড ডিফেন্স পজিশনে গুলি চালায়। সুন্দরবনি সেক্টরের কাছে পাকিস্তানের আইএসআই পরিচালিত একটি বড় সন্ত্রাসী লঞ্চ প্যাড ধ্বংস করা হয়েছিল তখন।
উল্লেখ্য, ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী পরিচালিত অপারেশন সিঁদুরে পাক অধিকৃত কাশ্মীর ও পাকিস্তানে শতাধিক জঙ্গি নিহত হয়। এর জবাবে পাকিস্তানি সেনা ড্রোন হামলা চালায়। তবে তাদের সেই চেষ্টাও বানচাল করা হয়। এরপর ১৩ মে অপারেশন কেলারের মাধ্যমে চার লস্কর-ই-তৈবা জঙ্গি নিহত হয় এবং তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়। এরপর আরও একটি অপারেশনে একাধিক জঙ্গিকে খতম করেছিল নিরাপত্তাবাহিনী।