ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে বাবা-মাকে হারানো প্রায় দুই ডজন শিশুকে দত্তক নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিরোধী দলীয় নেতা রাহুল গান্ধী। গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে পরিবারকে হারিয়েছিল ওই শিশুরা। জম্মু ও কাশ্মীরের কংগ্রেস সভাপতি তারিক হামিদ কারা জানিয়েছেন, পুঞ্চ জেলার ২২ জন শিশুর পড়াশোনার পুরো খরচ বহন করবেন রাহুল গান্ধী। এই শিশুরা হয় তাদের বাবা-মা উভয়কেই হারিয়েছে বা পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্যকে হারিয়েছে।
তারিক হামিদ কারা বলেন, ‘এই শিশুদের পড়াশোনা যাতে ব্যাহত না হয় সেজন্য প্রথম কিস্তির টাকা বুধবার দেওয়া হবে। সন্তানদের গ্র্যাজুয়েশন শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই সহায়তা অব্যাহত থাকবে। রাহুল গান্ধী মে মাসে পুঞ্চে গিয়েছিলেন, যেখানে তিনি স্থানীয় কংগ্রেস নেতাদের এই ক্ষতিগ্রস্থ শিশুদের তালিকা প্রস্তুত করতে বলেছিলেন। এর পরে একটি সমীক্ষা করা হয় এবং সরকারি নথি যাচাই করে চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করা হয়। রাহুল গান্ধী পুঞ্চের ক্রাইস্ট পাবলিক স্কুলেও গিয়েছিলেন, সেখানে শিশুদের সঙ্গে কথা বলার সময় রাহুল বলেছিলেন।
অপারেশন সিঁদুরের আগে থেকেই পাকিস্তানি সেনা সীমান্তে গোলাবর্ষণ কছিল। ৭ মে-র পর সেই গোলাবর্ষণ বেড়ে যায়। ৮ থেকে ১০ মে পর্যন্ত জম্মু অঞ্চলে, বিশেষ করে পুঞ্চে ভারী গোলাবর্ষণ করে পাক সেনা। ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলাও চালানো হয়েছিল। এসব হামলায় ২৭ জন নিহত ও ৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হন। পুঞ্চ জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল। সেখানে ১৬ জন প্রাণ হারিয়েছিল। গোলাবর্ষণে স্থানীয় লোকজন তাদের বাড়িঘর ছেড়ে সরকারি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছিলেন।

রাহুল গান্ধী জম্মু ও কাশ্মীরের পুঞ্চে গিয়ে মা-বাবা হারানো ছোট ছোট শিশুদের বলেছিলেন, ‘আমি তোমাদের জন্য গর্বিত। এখন আপনারা ভয় পাচ্ছেন, তবে আতঙ্কিত হবেন না, সবকিছু আবার স্বাভাবিক হয়ে যাবে। এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় আপনারা আরও কঠোরভাবে পড়াশোনা করবেন। আপনারা মন দিয়ে খেলবেন এবং স্কুলে প্রচুর বন্ধু তৈরি করবেন।’