সঞ্জয় রায়। আরজিকর হাসপাতালের সেমিনার হলে এক তরুণী মহিলা চিকিৎসকে খুন করার ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে তাকে। কিন্তু এই সঞ্জয় রায়ের কীর্তি শুনলে চমকে উঠবেন আপনিও। তবে তার মায়ের দাবি আমার ছেলে কলকাতা পুলিশে রয়েছে।
সূত্রের খবর, অন্তত পাঁচটা বিয়ে করেছিল সে। প্রথমে বেহালার এক তরুণীকে বিয়ে করেন। এরপর তার উপর চলত অত্যাচার। তারপর পার্কসার্কাস, ব্যারাকপুর, আলিপুরের আরও তিন তরুণীকে বিয়ে। একের পর এক বিয়ে। তারপরেও ক্ষান্ত হয়নি এই সঞ্জয়। মহিলা পুলিশ কর্মীদের সে ফোন করে উত্যক্ত করত বলে অভিযোগ। আলিপুরের মহিলা পরিচালিত পেট্রল পাম্পের এক কর্মীকেও বিয়ে করেছিলেন।
পঞ্চম স্ত্রীকে বিয়ের দুমাসের মধ্য়েই মৃত্যু হয় তার। ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। বিয়ের দুমাসের মধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতে মৃ্ত্যু হয় তার।
সঞ্জয় সিভিক ভলান্টিয়ার। কিন্তু ভবানীপুরের পাড়াতে সে পুলিশ বলেই পরিচিত ছিল। সিভিল ড্রেসের পুলিশ। এমনকী পুলিশে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকাও তুলত বলে অভিযোগ।
উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা। স্কুলে পড়ার সময় সে এনসিসি করত। পরে আর কলেজে ভর্তি হয়নি। তবে রাজনীতির অলিন্দে চলাফেরা করেছে। আরজিকরে বেশ পরিচিত নাম। ভবানীপুরেরে একটা ক্লাবে কিছুদিন বক্সিংও করত। তবে পাড়ার লোকজন তার উপর তিতিবিরক্ত। পুলিশ পরিচয় দিয়ে এলাকায় দাপিয়ে বেড়াত। আসলে ২০১৯ সালে সে সিভিক ভলান্টিয়ার হিসাবে যোগ দিয়েছিল। সেই সঞ্জয়কেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গোটা ঘটনায় একাধিক প্রশ্ন উঠছে।
রাত তিনটের সময় এক রোগীর চিকিৎসা সংক্রান্ত ব্যাপারে সেই সেমিনার হলে এসেছিলেন অপর এক জুনিয়র চিকিৎসক। তিনি পরে জানিয়েছিলেন রাত তিনটের সময় দেখা গিয়েছিল লাল রঙের কম্বল জড়িয়ে ঘুমোচ্ছেন মহিলা চিকিৎসক।
মনে করা হচ্ছে তারপরই খুন করা হয়েছে ওই মহিলা চিকিৎসককে। তবে গ্রেফতারের পরেও দেখা গিয়েছে সে ভাবলেশহীন। কোনও অনুশোচনা নেই। যখন তাকে পুলিশ ধরে নিয়ে গাড়িতে তুলছিল তখনও দেখা গিয়েছে একেবারে উদ্ধত হাবভাব। সরকারি হাসপাতালে তুমুল অত্যাচার করে এক মহিলা চিকিৎসককে খুন করার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।
একের পর এক বিয়ে করেছে। তার সম্পর্কে কেন খোঁজখবর নেয়নি কলকাতা পুলিশ?
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গিয়েছিল চেস্ট মেডিসিনের ওয়ার্ডের মধ্য় দিয়ে সে যাচ্ছে সেমিনার হলের দিকে। সেই সেমিনার হলে খুন হওয়া চিকিৎসকের দেহের পাশে পড়েছিল একটি সাদা রঙের হেডফোন।