আরজিকরে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় উত্তাল তিলোত্তমা। টলিউড থেকে গোটা বাংলা আরজিকর মেডিক্যাল কলেজের বিচার চাই বলে দাবি তুলেছে। সারা সোশ্যাল মিডিয়ার নিউজ ফিডে এখন একটাই দাবি আরজিকরে দ্বিতীয় বর্ষের তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের অভিযুক্তের কঠোরতম শাস্তি চাই। পথে নেমেছে আরজিকর হাসপাতালের ডাক্তার থেকে নার্সরা। আজ সকাল থেকেই চলছে বিক্ষোভ। নিরাপত্তা ও আসল ধর্ষকের শাস্তি চান তারা। আর কত দিন এইভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে হবে তরুণী চিকিৎসক থেকে নার্সদের। না আছে ঠিকমত সিসি ক্যামেরা, না আছে ঠিকমত লাইট। ঘুটঘুটে অন্ধকারের মধ্যে একা নাইট ডিউটি করতে হয় তরুণী ডাক্তারদের সাথে নার্সদেরও। গতকাল রাতে নাইট ডিউটিতে কর্মরত চেস্টের তরুণী এক চিকিৎসককে ধর্ষণ করে, নৃশংসভাবে খুন করা হয়। আরজিকরের চার তলায় সেমিনার হলে গলা টিপে মারা হয় তাকে।
যৌনাঙ্গে, পেটে, চোখে, ঠোঁটে রক্ত পাওয়া যায় নির্যাতিতার, এছাড়াও ধস্তাধস্তির কারণে প্রচুর চুল ও রক্তের চাপ দাগ দেখতে পাওয়া,সারা গায়ে কাল সিটা, আঙুলগুলো মুচড়ে মুচড়ে ভেঙে দেওয়া হয়েছে। যদিও এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম সঞ্জয় রায়। গুণধর অভিযুক্তের আবার পাঁচটা বিয়ে। জানা যায়, সঞ্জয়ের মোবাইল থেকে অনেক পর্ণ ভিডিও হদিশ পায় পুলিশ। এমনকি সেমিনার হলের বাইরে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরায় হলে ঠিক সাড়ে তিনটে নাগাদ গলায় ব্লুটুথ হেডফোন ঝুলিয়ে ঢুকতে দেখা যায় তাকে,ঠিক ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট পরে হেলমেট নিয়ে বেড়াতে দেখা যায় অভিযুক্তকে, তবে তখন তার গলায় হেডফোনটি ছিল না, তার হেডফোনটি মৃতার নিথর দেহের পাশে ছেঁড়া অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। তদন্তকারীরা, হেডফোনটি সঞ্জয়ের মোবাইলের সাথে পেয়ার হওয়াতে দুইয়ে দুইয়ে চার করে ফেলেন।এরপরই গ্রেফতার করা হয়।
জানা যায়, পেশায় সঞ্জয় সিভিক ভলেন্টিয়ার।বহিরাগত হলেও তার আরজিকর হাসপাতালে অবাধ যাতায়াত ছিল। এমনকি আরও অভিযোগ, অভিযুক্ত নাকি প্রায়ই হাসপাতালে মদের আসর বসাতেন। এমনকি ঘটনার দিন মত্ত অবস্থায় ছিল সে। সেমিনার হল থেকে বেরিয়েও মদ্যপান করেন সঞ্জয়। তবে এবার প্রশ্ন হল সত্যি কি একার পক্ষে নৃশংসভাবে ধর্ষণ করে খুন করা সম্ভব? সঞ্জয়ের সাথে আর কে কে ছিল তা খোঁজার চেষ্টা চলছে। জানা যায়, ১৪ দিনের জেল হেফাজত হয়েছে সঞ্জয়ের। তবে আরজিকর হাসপাতালের পড়ুয়ারা ও ডাক্তাররা মানতে নারাজ এই পাশবিক নির্যাতন একার পক্ষে করা সম্ভব, তাদের দাবি এর সাথে আরও অনেকে জড়িত। তাদের গ্রেফতার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে পাশাপাশি হাসপাতালের কাজ বিরত থাকবে।
এখন দেখার অপেক্ষা ঠিক কতটা বিচার পায় দ্বিতীয় বর্ষে পড়া এই তরুণী চিকিৎসক?মৃতার মায়ের দাবি, দোষীর কঠোর শাস্তি হোক। সোনার প্রতিমার মতন মেয়েকে নৃশংসভাবে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে।
পাশাপাশি জনপ্রিয় অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন, তিনি লিখেছেন, এবার অন্তত কেউ মেয়েটাকে দোষ দেবেন না, পাশাপাশি হাসপাতাল সুপারের মন্তব্যে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।