পুলিশ লুকাচ্ছে বাথরুমে, ডাক্তার,নার্সদের বলছেন পালান দিদি। হাসপাতালের সিকিউরিটি গার্ড ভয়ে ড্রেস খুলে ফেলে স্যান্ডো গেঞ্জি পরে ঘুরছেন,নামী সংবাদমাধ্যমের মহিলা কর্মী প্রাণ ভয়ে দৌড়াদৌড়ি করছেন, লাইট অফ করে ওটি রুমে লুকিয়ে লাইভ দিচ্ছেন টিভি চ্যানেলে। কার্যত আরজিকর হাসপাতালে এমন দৃশ্যই দেখা গেছে ১৫ আগস্ট রাত সাড়ে ১২ টার পর থেকে। পুলিশের সাথে খণ্ডযুদ্ধ বাধে দুষ্কৃতীদের। প্রতিবাদের নামে হাসপাতাল তচনচ করে ফেলেছে কয়েক হাজার দুষ্কৃতীর দল।
তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যা ঘিরে যে রাতে কলকাতার রাত দখলে নেমেছিলেন মহিলারা, সেই মধ্যরাতেই কলকাতায় আর জি কর হাসাপাতালে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় একদল দুষ্কৃতী। বাংলা জুড়ে প্রশ্ন কারা এরা? হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে কার্যত তাণ্ডব চালিয়েছে এরা। এই পরিস্থিতিতে কলকাতা পুলিশ ফেসবুকে পোস্টে বেশ কিছু ছবি তুলে ধরেছে।কলকাতা পুলিশের আপলোড করা ফেসবুক পোস্টের ছবিতে একাধিক জনকে দেখা যাচ্ছে। তাঁদের মুখে গোল লাল দাগ করা রয়েছে ছবিতে। পুলিশ এই পোস্টে সাফ লিখছে, ‘সন্ধান চাই’। প্রশ্ন উঠছে এরা কারা? প্রশ্ন এও উঠছে যে, এঁরাই কি তাহলে মধ্যরাতের আরজি কর-এ হামলা চালিয়েছেন? যদিও পুলিশের ওই ফেসবুক পোস্টটিতে আর জি কর প্রসঙ্গ নিয়ে একটিও শব্দ নেই। তার জায়গায়, সাফ জানানো হয়েছে, এঁদের সন্ধান কেউ জানলে, যেন পুলিশকে জানানো হয়।
কলকাতা পুলিশের ফেসবুক পোস্টে এই ছবিগুলো পোস্ট করে লেখা রয়েছে, ‘সন্ধান চাই: নীচের ছবিতে যাদের চেহারা চিহ্নিত করা হয়েছে তাদের সন্ধান জানা থাকলে অনুরোধ, জানান আমাদের, সরাসরি বা আপনার সংশ্লিষ্ট থানার মাধ্যমে।’প্রসঙ্গত, মধ্যরাতের আরজি কর যখন ১৪ অগস্ট রাতে হাসপাতালেরই এক চিকিৎসকের মৃত্যুতে গর্জে উঠছিল, প্রতিবাদে মুখর হয়েছিল গোটা শহর, বাংলা, ঠিক সেই সময় হাসপাতালে কয়েকজন ঢুকে তাণ্ডব চালায়। তাদের হাতে লাঠি ছিল বলে অনেকে দাবি করছেন। ইতিমধ্যেই ভাঙা সিসিটিভির পরিস্থিতির ছবি সামনে এসেছে।
ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পুলিশের গার্ডরেল ভেঙে তারা সিঁড়ি পেরিয়ে উপরে উঠতে থাকেন, বলেও অনেকে জানিয়েছেন। এদিকে, ইমার্জেন্সিতে বেড, ওষুধ, ততক্ষণে লন্ডভন্ড অবস্থায় মাটিতে পড়ে। প্রথমেই প্রশ্ন ওঠে, এই ঘটনায় আরজি কর-এর সেমিনার রুমে কোনও কিছু হয়ে যায়নি তো? যে সেমিনার রুমেই সেই রাতে নৃশংসভাবে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। ওই রুমেই মৃত্যু হয় তরুণী চিকিৎসকের। পুলিশ সাফ জানিয়েছে, সেমিনার রুম কেউ স্পর্শ করেনি।সেই রাতের হামলায় আর জি কর-এ প্রায় ৫ থেকে ৭ হাজার জনের বাহিনী ঢুকে পড়েছিল বলে খবর। এই তথ্য দিয়েছে কলকাতা পুলিশ। পুলিশের বহু কর্মী আধিকারিক ঘটনাস্থলে আহত হন। অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি।
পুলিশ তার ফেসবুক পোস্টে জানায়,’এই হামলার নেতৃত্বে থাকা দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করেছি আমরা। এদের বিরুদ্ধে দ্রুত কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ এরপরই আসে এই ছবিগুলি। তবে সেই পোস্টে আরজিকর কাণ্ড নিয়ে কিছু লেখা নেই।যদিও এখনও পর্যন্ত ১৫ জনকে করেছে পুলিশ।