কখনও সুইগি,কখনও জোম্যাটো,কখনো ওলা আবার কখনও র্যাপিডো স্কুটি চালিয়ে নিজের পেট চালান এক যুবতী। আজ্ঞে হ্যাঁ, ঠিকই শুনছেন।রূপা চৌধুরী(Rupa Chowdhury), পশ্চিমবঙ্গের প্রথম মহিলা হিসেবে ডেলিভারিতে কাজ করেন।তিনি পরিবারের জন্য এই কাজে যুক্ত হোন।২০১৮ সালে বাবা যখন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন,তখন পার্ট টাইমে কাজ করার জন্য প্রথম রূপা সুইগিতে আবেদন করেন,এরপর পরীক্ষা দিয়ে তিনি নির্বাচিত হোন।এরপর থেকেই শুরু হয় রূপার লড়াই। বাবার চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার দরকার ছিল,যার কারণে সুইগি ছাড়াও তিনি র্যাপিডোতে চালক হিসেবে কাজ করা শুরু করেন।
তবে এই জীবন ছাড়াও রূপার আরও এক জীবন ছিল, অন্যদের মতন চোখে হাজারও স্বপ্ন ছিল।স্বামী ছিল,শ্বশুরবাড়ি ছিল, কিন্তু তা সবই ছিল ক্ষণিকের।মাত্র ৪ বছরের বিবাহিত জীবনে বহু মানসিক অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছিল তাকে।মাত্র ২০ বছর বয়সে বাবার পছন্দ করা ছেলেকে বিয়ে করেছিলেন তিনি,কিন্তু সেই বিয়ে সুখময় হয়নি। চার বছরের সংসারে মাতৃসুখও পান রূপা। তার ১৫ বছরের এক পুত্র সন্তানও রয়েছে।স্বামীর সাথে বিচ্ছেদের পর তার এই পুত্র সন্তানই বেঁচে থাকার আরেক কারণ।
রূপা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অক্লান্ত পরিশ্রম করে অর্থ উপার্জন করেন। রোদ,ঝড়,বৃষ্টির মধ্যে স্কুটি চালিয়ে কখনো ডেলিভারি করছেন,আবার কখনো মানুষদের তাদের গন্তব্য স্থানে পৌঁছে দিচ্ছেন সে।তবে এই কাজের মধ্যেও নানা ধরনের টোন টিপ্পনীর শিকার হতে হয় তাকে কারণ তার বেশভূষা।স্বামীর সাথে বিচ্ছেদ ও বাবা,মা,দিদি মারা যাওয়ার পর রূপা এতটাই শক্ত হয়ে যান যে এইভাবে ছাড়া আর কোনো রাস্তা ছিল না উপার্জনের। তিনি এখন তার জীবনে খুব সুখে ও শান্তিতে রয়েছেন।তিনি জানান,ভবিষ্যতে আর বিয়ে নয়,একাই তিনি ভালো আছেন।রূপার এই সংগ্রামকে ইনিউজবাংলার তরফ থেকে কুর্নিশ জানাই। তার জীবন সুখময় হোক এই কামনাই রইল।
