ভারতীয় মহাকাশচারী গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা অ্যাক্সিওম-৪ মিশনের উৎক্ষেপণ স্থগিত করা হয়েছে। বুধবার শুভাংশুর মহাকাশে উড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও মিশনটি আপাতত স্থগিত করা হচ্ছে। ১৯৮৪ সালে সোভিয়েত রাশিয়ার সয়ুজ মহাকাশযানে রাকেশ শর্মার ঐতিহাসিক মিশনের ৪১ বছর পর শুক্লা দ্বিতীয় ভারতীয় নভোচারী হিসেবে মহাকাশে যেতে চলেছেন। তবে সেই ঐতিহাসিক মুহূর্ত আরও কিছুটা বিলম্বিত হল।
রকেটে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ফের স্থগিত অ্যাক্সিওম-৪ মিশন। এই অভিযানে করেই মহাকাশে যাওয়ার কথা ভারতীয় মহাকাশচারী শুভাংশু শুক্লার। জানানো হয়েছে, শিগগিরই উৎক্ষেপণের নতুন তারিখ ঘোষণা করা হবে। এর আগে একাধিকবার এই মিশন পিছিয়ে গিয়েছে। ১০ জুন এই মিশন শুরু হওয়ার কথা ছিল, তা আবহাওয়ার কারণে পিছিয়ে ১১ জুন হয়েছিল। তবে আজও এই মিশন শুরু হবে না।
উল্লেখ্য, স্পেসএক্সের ফ্যালকন ৯ রকেটে করে শুভাংশুদের আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে নিয়ে যাওয়ার কথা এই অ্যাক্সিওম ৪ মিশনে। তবে স্পেসএক্স ঘোষণা করেছে যে রকেটে ‘পোস্ট স্ট্যাটিক ফায়ার বুস্টার পরিদর্শনের সময় সনাক্ত করা হয় যে এলওএক্স লিক রয়েছে’। সেই ‘লিক’ মেরামত করতে অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন।
কেন এই অভিযান ফের পিছিয়ে দেওয়া হল, সে বিষয়ে আরও আলোকপাত করে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জানিয়েছে, লঞ্চ প্যাডে সাত সেকেন্ডের হট টেস্টের সময় প্রোপালশন বে-তে একটি এলওএক্স (লিকুইড অক্সিজেন) লিকেজ ধরা পড়ে। তাই উৎক্ষেপণের ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি। আগে প্রথমে লিক মেরামত করা প্রয়োজন। এরপর এই সংক্রান্ত যাবতীয় পরীক্ষা করা হবে। তারপর ওড়ার জন্য ছাড়পত্র দেওয়া হবে রকেটটিকে।

এএক্স-৪ মহাকাশযানে করে ভারত, পোল্যান্ড ও হাঙ্গেরির নভোচারীরা মহাকাশে যাবেন। তিনটি দেশের জন্যই এটি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে তাদের প্রথম মিশন। অ্যাক্সিওম স্পেসের এটি চতুর্থ বেসরকারি নভোচারী মিশন হওয়ার কথা। ৭০ মিলিয়ম ডলার মূল্যের একটি চুক্তির অংশ হিসেবে এই মিশনে যাবেন ভারতীয় মহাকাশচারী শুভাংশু।
এর আগে ৮ জুন এই মহাকাশ অভিযান শুরু হওয়ার কথা ছিল। তখনও মিশনটি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তারপর ‘প্রতিকূল আবহাওয়ার’ কারণে অ্যাক্সিওম -৪ মিশনের উৎক্ষেপণটি ১০ জুনের বদলে ১১ জুন হবে বলে জানানো হয়। আর এবার মিশন পিছিয়ে যেওয়ার নেপথ্যে আছে লিকুইড অক্সিজেন লিক। শুভাংশু শুক্লা এএক্স৪ মিশনের পাইলট হবেন এবং মিশন কমান্ডার পেগি হুইটসন, হাঙ্গেরির বিশেষজ্ঞ টিবর কাপু এবং পোল্যান্ডের স্লাওস উজনানস্কি-উইসনিউস্কিও তাঁর সঙ্গে এই মিশনে থাকবেন। এই মিশনের আগে শুভাংশু শুক্লাকে প্রায় ১০০০ ঘণ্টার কঠোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এই মিশনে শূন্য মাধ্যাকর্ষণে গবেষণার কাজ করবেন মহাকাশচারীরা।