ভারতীয় মহাকাশচারী শুভাংশু শুক্লা এবং আরও তিনজন মঙ্গলবার ফ্লোরিডায় নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের উদ্দেশে অ্যাক্সিওম স্পেসের চতুর্থ মানব মহাকাশ ফ্লাইট, অ্যাক্সিওম -৪ মিশনে যাত্রা শুরু করবেন। প্রায় ২৮ ঘণ্টার যাত্রা শেষে ১১ জুন ভারতীয় সময় রাত ১০টায় আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে ‘ডক’ করবে অ্যাক্সিওম-৪। এর আগে ৮ জুন অভিযানটি উৎক্ষেপণের কথা থাকলেও গত সপ্তাহে তা দুই দিন পিছিয়ে ১০ জুন করা হয়েছিল।
শুভাংশু শুক্লা এএক্স৪ মিশনের পাইলট হবেন এবং মিশন কমান্ডার পেগি হুইটসন, হাঙ্গেরির বিশেষজ্ঞ টিবর কাপু এবং পোল্যান্ডের স্লাওস উজনানস্কি-উইসনিউস্কিও তাঁর সঙ্গে এই মিশনে থাকবেন। ১৯৮৪ সালে রাশিয়ার সয়ুজ মিশনে রাকেশ শর্মার ঐতিহাসিক মহাকাশ যাত্রার ৪১ বছর পর অ্যাক্সিওম-৪ মিশনের মাধ্যমে মহাকাশে প্রত্যাবর্তন করতে যাচ্ছে ভারতীয় কোনও মহাকাশচারী। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যারোনটিকস অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘স্পেসএক্সের ফ্যালকন ৯ রকেটে (ড্রাগন ক্যাপসুলে) করে নভোচারীরা কক্ষপথের পরীক্ষাগারে যাবেন। ডকিংয়ের সময় বুধবার ১১ জুন মার্কিন সময় প্রায় দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট (ভারতীয় সময় রাত ১০টা আইএসটি)।’
উৎক্ষেপণের আগে স্পেসএক্স শনিবার ফ্যালকন ৯ এবং ড্রাগন মহাকাশযানকে ফ্লোরিডার লঞ্চ প্যাডে পাঠানো হয়েছে। ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্পেসএক্সের পুনঃব্যবহারযোগ্য ফ্যালকন ৯ রকেটের উপরে ড্রাগন মহাকাশযানটি যুক্ত করতে দেখা গেছে। এদিকে, গত সপ্তাহে ইসরোর চেয়ারম্যান ভি নারায়ণন মহাকাশযাত্রার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে অ্যাক্সিওম স্পেস পরিদর্শন করেছিলেন। শুক্লা এবং অন্য তিন নভোচারী তাঁদের মহাকাশ ভ্রমণের প্রস্তুতির জন্য ২৫ মে থেকে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন এবং প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। অ্যাক্সিওম স্পেস প্রশিক্ষণ কর্মসূচির একটি ভিডিয়ো শেয়ার করেছিল তাদের প্রস্তুতি নিয়ে।
এই অ্যাক্সিওম ৪ মিশনের ক্রু ১৪ দিন আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে অবস্থান করবেন। সেই সময় এএক্স৪ ক্রুদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্কুল শিক্ষার্থী এবং মহাকাশ ক্ষেত্রের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের কথা বলার সম্ভাবনা রয়েছে। অ্যাক্সিওম-৪ মিশনের ক্রুরা লঞ্চের আগে গত সপ্তাহের শুরুতে একটি সংবাদ সম্মেলনও করেছিলেন। সেখানে তাঁরা বলেছিলেন, ‘আমরা লঞ্চের জন্য ভালো প্রস্তুতি নিয়েছি, আমরা সমস্ত প্রশিক্ষণ শেষ করেছি।’ মিশনে সাংস্কৃতিকভাবে বৈচিত্র্যময় ক্রু সম্পর্কে কমান্ডার হুইটসন বলেছিলেন, এই দলটি মহাকাশ ক্ষেত্রে ‘আন্তর্জাতিক সহযোগিতাকে’ আরও উৎসাহিত করবে।

এদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, ভারতীয় বায়ুসেনার গ্রুপ ক্যাপ্টেন যে আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে যাবেন, সেটার মহাকাশ ক্ষেত্রে ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে। মহাকাশযানে করে তিনি যে মহাশূন্যে পাড়ি দেবেন, তা বাস্তব অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে সাহায্য করবে। মাধ্যাকর্ষণ শক্তির খাপ খাইয়ে নিতে এবং জরুরি পরিস্থিতিতে প্রস্তুত থাকার মতো বিষয়ের সঙ্গে ধাতস্থ হয়ে উঠবেন। যা ভারতের গগনযান মিশনের সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।