ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনী বা ‘এসআইআর’ নিয়ে ক্রমশ রাজনৈতিক তাপমাত্রা বাড়ছে রাজ্যে। নির্বাচন কমিশনের এই প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই পথে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এবার সেই ইস্যুতে সরাসরি বিধানসভায় আক্রমণ শানাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে শাসকদল। জানা গিয়েছে, আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে এসআইআরের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব আনার বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে তৃণমূল পরিষদীয় দল।
আগামী বছরই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে এ বছরের শীতকালীন অধিবেশনই চলতি বিধানসভার শেষ পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন হতে চলেছে। কারণ, আগামী ফেব্রুয়ারিতে কেবল ভোটের আগে অন্তর্বর্তী বাজেট অধিবেশন হবে। ফলে রাজনৈতিকভাবে এই অধিবেশনের গুরুত্ব অনেকটাই বেশি। তৃণমূল মনে করছে, এই অধিবেশনই হবে রাজ্যের মানুষকে বার্তা দেওয়ার বড় মঞ্চ, যে মঞ্চ থেকে এসআইআরের বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান জানানো যাবে এবং বিজেপি ও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে তোপ দাগা যাবে।
তৃণমূলের অভিযোগ, কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপির ইঙ্গিতেই নির্বাচন কমিশন রাজ্যে এই ‘বিশেষ নিবিড় সংশোধনী’ প্রক্রিয়া চালু করেছে। এতে সাধারণ ভোটারদের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়া এবং নাগরিকত্ব হারানোর আশঙ্কায় আতঙ্ক তৈরি হচ্ছে রাজ্যজুড়ে। আরও গুরুতর অভিযোগ, এই আতঙ্কেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মানুষ আত্মহত্যা করছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও সম্প্রতি বলেছেন, এসআইআরের নামে বাংলার মানুষকে ভয় দেখানো হচ্ছে, কিন্তু দিদি আছে, ভয় পাবেন না।
মঙ্গলবারই কলকাতার রেড রোড থেকে জোড়াসাঁকো পর্যন্ত এক প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের তরফে স্পষ্ট বার্তা, এই আন্দোলন শুধু রাস্তায় নয়, এবার পৌঁছবে বিধানসভাতেও। দলের এক প্রবীণ পরিষদীয় সদস্য বলেন, নির্বাচন কমিশনের এই এসআইআর প্রক্রিয়া মানুষকে আতঙ্কে ফেলছে। নাগরিকত্ব হারানোর ভয়ে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে। তাই দলের নেত্রী ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন। পরিষদীয় দলও চায়, এবার বিধানসভায় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব এনে কমিশন ও বিজেপির বিরুদ্ধে অবস্থান জানাতে। তবে তৃণমূল এখনও প্রস্তাবের খসড়া নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু জানায়নি। দলের ভেতরে আলোচনায় বলা হচ্ছে, সর্বোচ্চ নেতৃত্বের সবুজ সংকেত পেলেই প্রস্তাবটি আনুষ্ঠানিকভাবে তোলা হবে শীতকালীন অধিবেশনে।
