Soumitra Banerjee। মহিলাদের ত্রাস ছিলেন সৌমিত্র!

Spread the love

ঢুলু ঢুলু চোখ, রাস্তায় মহিলা দেখলেই টোন টিটকিড়ি।
‘মালটাকে গাড়িতে তোল…।’ বাংলা পারিবারিক ছবি যখন হল কাপাচ্ছে, সেই সময় ‘নবাব’ ছবির এই ডায়লগ রীতিমতো লোকের মুখে মুখে ঘুরেছিল। ভালো-খারাপ ‘লক্ষ্মণ রেখা’ অনেকে টেনে দিতেন অভিনেতা সৌমিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়কে(Soumitra Banerjee) দেখিয়ে। আর সেখানেই উঠে এসেছিল এই সংলাপ,‘মালটাকে গাড়িতে তোল…।’বাঙালি মায়েরা উদাহরণ দিয়ে বলতেন, ‘ওরকম হও না।’ পরে এই সংলাপ সোশ্যাল মাধ্যমে ভাইরালও হয়। কিন্তু, সেই সৌমিত্র কি শুধুই ছিলেন খলনায়ক? তা কিন্তু নয়। সৌমিত্রর জীবন সম্পর্কে জানলে কিন্তু চমকে যাবেন!১৯৫৪ সালে হুগলির পান্ডুয়ায় জন্মগ্রহন করেছিলেন অভিনেতা সৌমিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৯৬৪ সালে “সুভা ও দেবতার গ্রাস” ছবিতে অভিনয় করেন সৌমিত্র। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র দশ বছর। এরপর দীর্ঘদিন তাঁকে দেখা যায়নি বড়পর্দায়।জানা যায়, পারদর্শী এই অভিনেতা নাকি এক সময় প্রবল অর্থকষ্টে ভুগেছেন। আজ জানবো তিনি কেন সিনেমা জগৎ থেকে অনেক দূরে চলে গেলেন?

১৯৮২ সালে ত্রয়ী ছবিতে অভিনয় করে ফের কামব্যাক করেন সৌমিত্র। ছবিতে সুপারস্টার মিঠুন চক্রবর্তী এবং দেবশ্রী রায়ের সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করেছেন তিনি। এই ছবি বক্স অফিসে সুপারহিট হওয়ার পর লাইমলাইটে চলে আসেন সৌমিত্র।৮০ র দশকে খলনায়কের চরিত্র মানেই শিরোনামে রয়েছে সৌমিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। কেরিয়ারের শুরু থেকেই তিনি নায়কের চরিত্রে নয়, খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করেই দর্শকদের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন। সেই সূত্রে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়,তাপস পাল,চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তীর কাছে পর্দায় প্রচুর মার ও খেয়েছেন।নায়কের হাতে পর্দায় সৌমিত্র যত মার খেতেন,দর্শক তত আনন্দ পেতো। যদিও ব্যক্তিগতভাবে সৌমিত্রর ইচ্ছে ছিল নায়কের চরিত্রে অভিনয় করার। সেই সুযোগ আর হয়ে ওঠেনি তাঁর।প্রায় দেড়শো ছবিতে অভিনয় করেছেন সৌমিত্র । অভিনয়ের পাশাপাশি গান গাইতেন তিনি।

অভিনেতা হবেন কখনও ভাবেননি সৌমিত্র। বরং সংগীত শিল্পী হতে চেয়েছিলেন তিনি। কিশোর কুমারের গান ফুটে উঠতো তাঁর কন্ঠে। তাই পাড়ায় কোনও গানবাজনার অনুষ্ঠান হলেই অংশগ্রহণ করতেন তিনি। শ্রোতারাও সৌমিত্রের গানে মুগ্ধ হত।বাস্তব জীবনে সৌমিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাবার নাম ছিল ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই অনেকেই তাঁকে অভিনেতা ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছেলে নানু ভেবে ভুল করতেন। একটা সময় ভালোবেসে তিনি বিয়ে করেছিলেন অভিনেত্রী রিতা কয়রালকে। যদিও অভিনেতার বিবাহিত জীবন মোটেও সুখের ছিল না।নিয়মিত মদ্যপানের জেরে বাড়িতে অশান্তি লেগেই থাকতো। অল্প কিছুদিনের মধ্যে রিতা কয়রালের সঙ্গে সৌমিত্রের বিবাহ বিচ্ছেদ ও ঘটে যায়।

ছবিতে কাজ না পেয়ে বেশ কিছু যাত্রাদলের সঙ্গে ও যুক্ত হন তিনি। যদিও শেষরক্ষা হয়নি। ২০০০ সালে মাত্র ৪৫ বছর বয়সে অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে সৌমিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যু ঘটে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *