পুরুলিয়ায় এক স্কুল ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার করা হল তৃণমূল কংগ্রেস নেতা। জানা গিয়েছে, মৃত ছাত্র নবম শ্রেণিতে পড়াশোনা করত। একটি বেসরকারি স্কুলে পড়ত সেই ছাত্র। সেই স্কুলেরই সম্পাদক জগন্নাথ মাহাতো। তাকেই সেই মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে। মৃত ছাত্রকে মারধরের অভিযোগ জগন্নাথের বিরুদ্ধে। এই আবহে মঙ্গলবার সকালে জগন্নাথকে কোন্দা থানার পুলিশ গ্রেফতার করে। উল্লেখ্য, জগন্নাথ মাহাতো এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা। পুরুলিয়া তৃণমূল সাংগঠনিক জেলা কমিটির সদস্য। ২০০৮ সালে এই স্কুলটি তৈরি করেন তিনি। জগন্নাথ মাহাতো ছাড়াও এই ঘটনায় অভিযোগ উঠেছে ওই বেসরকারি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নারায়ণ মাহাতো, সহ-প্রধান শিক্ষক গুণধর মাহাতো ও শিক্ষক বিদ্যুৎ মাহাতোর বিরুদ্ধে। তবে আপাতত তাঁদের গ্রেফতার করা হয়নি।
রিপোর্ট অনুযায়ী, কোন্দায় অবস্থিত বেসরকারি স্কুলের হোস্টেল থেকে এক ছাত্রের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। গত রবিবার সন্ধ্যায় সেই মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। সেই মৃত পড়ুয়ার বাড়ি স্কুল থেকে মাত্র ২০০ মিটার দূরে। তাও সে হোস্টেলেই থাকত। ছাত্রাবাসের ১২ নম্বর ঘরে থাকত সেই পড়ুয়া। রবিবার সে কোচিং ক্লাস করতে গিয়েছিল। এরপর ক্লাস শেষে হোস্টেলে নিজের ঘরে চলে যায় সেই ছাত্র। পরে সন্ধ্যার পরে ঝুলন্ত অবস্থায় সেই ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছিল ছাত্রের মৃতদেহ।
এই আবহে মৃত ছাত্রের পরিবারের অভিযোগ, বাড়ি থেকে এত কাছে হলেও স্কুল সময়মত সময় দেয়নি তাঁদের। অন্য পড়ুয়াদের মুখে ছাত্রের মৃত্যুর খবর জানতে পেরেছিলেন তাঁরা। এই আবহে মৃত পড়ুয়ার মা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘ওর বন্ধুদের মুখে শুনলাম, ওকে নাকি শনিবার স্কুলের এক শিক্ষক খুব মেরেছে। সেই কারণেই রবিবার অন্য পড়ুয়ারা ওঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল। তারপর দেখে এই কাণ্ড।’

এদিকে পড়ুয়ার মৃত্যুর খবরে এলাকা উত্তপ্ত হয়ে পড়ে সোমবার সকালে। স্কুলের অন্য পড়ুয়ারা অভিযোগ করে স্কুল সম্পাদক মৃত ছাত্রকে মারধর করেছিলেন। এই আবহে পুরুলিয়ার মানবাজার রাজ্য সড়কে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন স্থানীয়রা। ৯ ঘণ্টা ধরে পথ অবরোধ করে চলে আন্দোলন। পরে প্রতিবাদীদের দাবির মতো অভিযুক্ত সম্পাদককে গ্রেফতার করা হয়। ধৃত জগন্নাথের ভাইকেও পুলিশ আটক করে। পরে জগন্নাথের ভাইকে ছেড়ে দেওয়া হয়।