এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৭৭, বোয়িং ৭৮৭ বিমানগুলির ভারী রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব এতকাল ছিল তুরস্কের সংস্থা ‘টার্কিশ টেকনিকের’ কাছে। তবে এয়ার ইন্ডিয়ার সিইও এবং এমডি ক্যাম্পবেল উইলসন রবিবার বলেছেন যে তারা টার্কিশ টেকনিকের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে চলেছে। তাদের বদলে বিশ্বের অন্যান্য বিশ্বব্যাপী এমআরও (রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত ও ওভারহল) সরবরাহকারীদের কাছ থেকে রক্ষণাবেক্ষণ করাবে তারা।
এর আগে ভারতের সঙ্গে সংঘাতের সময় পাকিস্তানকে প্রকাশ্য সমর্থন করেছিল তুরস্ক। প্রথমে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর আওতায় ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী হামলার নিন্দা জানিয়েছিল তুরস্ক। এমনকী পাকিস্তানে নিজেদের ড্রোনও পাঠিয়েছিল তুরস্ক। তারপরই ভারত সরকার তুরস্কের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার পথে হেঁটেছে। এহেন পরিস্থিতিতে এবার ‘জনসাধারণের আবেগকে’ সম্মান জানিয়ে ‘টার্কিশ টেকনিকের’ সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পদক্ষেপ নিচ্ছে এয়ার ইন্ডিয়া।
এদিকে দু’দিন আগেই কেন্দ্রের তরফে ইন্ডিগোকে বলা হয়েছিল, তারা যাতে তুরস্কের সংস্থা টার্কিশ এয়ারলাইন্সের সঙ্গে তিন মাসের মধ্যে এয়ারক্রাফ্ট লিজে নেওয়ার চুক্তি বাতিল করে। উল্লেখ্য, ইন্ডিগো, টার্কিশ এয়ারলাইন্সের দুটি বোয়িং ৭৭৭এস লিজে নিয়েছে আর তা অপারেট করে। তাদের কাছে এই এয়ারক্রাফ্ট সংক্রান্ত ‘পারমিট’ ছিল ৩১ মে পর্যন্ত। সেই অনুমোদনের মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছিল ইন্ডিগো। কেন্দ্রের তরফে সেই অনুমতির আবেদন খারিজ করা হয়েছে। পাল্টা ৩ মাসের মধ্যে এই চুক্তি শেষ করতে বলা হয়েছে।৮ ও ৯ মে পাকিস্তান যে ড্রোন দিয়ে ভারতে হামলা করেছে তার মধ্যে বেশ কয়েকটি ড্রোন তুরস্কের। এরপরই কোপ পড়ে সেলেবি এয়ারপোর্ট সার্ভিসেস ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের ওপর। উল্লেখ্য, এই সংস্থা ভারতের ৯ বিমান বন্দরে গ্রাউন্ড সার্ভিসের কাজে যুক্ত ছিল। এই নিয়ে সেলেবি অবশ্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। সেখানে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

অপারেশন সিঁদুরের পরপরই তুরস্কের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সংস্থা সেলেবি এয়ারপোর্ট সার্ভিসেসকে দেওয়া নিরাপত্তা ছাড়পত্র প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র। গত ১৫ মে ব্যুরো অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটির (বিসিএএস) নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সেলেবির আবেদন করেছিল দিল্লি হাইকোর্টে। সেই মামলার শুনানির সময় সিল করা খামে সিঙ্গল বেঞ্চের হাতে একটি নথি তুলে দিয়েছিলেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তিনি বলেছিলেন, ‘সরকারের কাছে ইনপুট ছিল, এবং এই পরিস্থিতিতে দেশের বিমানবন্দরগুলিতে সেলেবিকে কাজ করতে দেওয়া বিপজ্জনক হবে বলে মনে করা হয়েছিল।’