গত ১২ জুন আমদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার দুর্ঘটনা ঘিরে ক্রমবর্ধমান জল্পনা বাড়ছে। এই আবহে আজ সংসদে বাদল অধিবেশনে বিমানমন্ত্রী কে রামমোহন নাইডু ‘সত্যের গুরুত্বের’ উপর জোর দিলেন। জনসাধারণ এবং মিডিয়াকে তদন্তের সরকারি ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। চলমান তদন্তকে ঘিরে বাইরের চাপ এবং ভুল তথ্য সম্পর্কে রাজ্যসভায় উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে নাইডু বলেন, ‘আমরা সত্যের সাথে দাঁড়াতে চাই, অন্য কিছু নয়।’
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোর (এএআইবি) প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, তারা নিরপেক্ষতার সঙ্গে তদন্ত পরিচালনা করছে। নাইডুর কথায়, ‘এয়ার ইন্ডিয়ার আমদাবাদ বিমান দুর্ঘটনার তদন্তে এএআইবি একটি সুনির্দিষ্ট, নিয়ম-ভিত্তিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করছে। ১২ জুন সংঘটিত এই দুর্ঘটনা বর্তমানে সক্রিয় তদন্তাধীন রয়েছে। প্রাথমিক রিপোর্ট পর্যালোচনা করা হলেও অকাল সিদ্ধান্তে না আসার আহ্বান জানাচ্ছি। চূড়ান্ত প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করা ঠিক হবে না। আমি মনে করি না এটা কারও পক্ষ থেকে ভালো। আমরাও খুব সতর্ক রয়েছি এবং রিপোর্টটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অধ্যয়ন করছি এবং সুরক্ষার দিক থেকে যা যা করা দরকার তা করার জন্য আমরা প্রস্তুত।’
প্রসঙ্গত, গত ১২ জুন আমদাবাদ থেকে টেকঅফ করার পরপরই ভেঙে পড়েছিল এয়ার ইন্ডিয়ার এআই-১৭১ উড়ানটি। সেই বিমান দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট ঘিরে অসন্তোষ দেখা দিয়েছিল পাইলটদের মধ্যে। বিশেষ করে সেই রিপোর্টকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স এবং ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের মতো আন্তর্জাতিক সবাদমাধ্যমের রিপোর্টিংয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন ভারতীয় পাইলটরা।

এর আগে তদন্তকারী সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়েছিল, ইঞ্জিনের ফুয়েল সুইচ অফ থাকায় বিমানটি ভেঙে পড়েছিল। এরপর এ বিষয়ে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ককপিটে দুই পাইলটের কথোপকথনে জানা যায়, বিমানের ফুয়েল সুইচ বন্ধ করে দিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিমানের প্রথম অফিসের পাইলট যখন সিনিয়র পাইলটকে জ্বালানি সুইচ কেটে দেওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করেন, তখন ক্যাপ্টেন কোনও উত্তর দেননি এবং চুপ করে থাকেন। এই সময় ফার্স্ট অফিসার পাইলট বেশ অবাক হন।
এএআইবির প্রতিবেদনে পাইলটদের মধ্যে কথোপকথনের উল্লেখ করা হয়েছিল। তবে কোন পাইলট কী বলেছেন তা এই রিপোর্টে বলা হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন রিপোর্টের পর ফের একবার আলোচনায় উঠে এসেছে আমদাবাদের বিমান দুর্ঘটনার কারণ। এদিকে আমেরিকার সংবাদমাধ্যমের হাতে এই রিপোর্টের বিশদ তথ্য কীভাবে চলে যাচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। এই আবহে দেখা দেয় বিতর্ক।