ইরানের হামলা থেকে ইজরায়েলকে রক্ষার জন্য মধ্যপ্রাচ্যে দ্রুত সামরিক বিমান, যুদ্ধজাহাজ ও লোকবল মোতায়েন করছে যুক্তরাষ্ট্র। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ধারাবাহিক কয়েকটি পোস্টে ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, ‘ইরানের আকাশ সম্পূর্ণ ভাবে নিয়ন্ত্রণ’ করছে যুক্তরাষ্ট্র। এই আবহে চলমান এই সংঘাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিয়েছেন খোদ ট্রাম্প।
বার্তা সংস্থা এপির মতে, ওয়াশিংটন সরাসরি ইরানের ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক স্থাপনাগুলিকে লক্ষ্যবস্তু করতে পারে – বিশেষ করে ফোর্দো সমৃদ্ধকরণ প্ল্যান্টটিকে নিশানা করতে পারে আমেরিকা। কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাঙ্কার-বিধ্বংসী জিবিইউ -৫৭ বোমা রয়েছে যা গভীর ভূগর্ভস্থ সাইটে আঘাত হানতে সক্ষম, যা কেবলমাত্র বি-২ স্পিরিট স্টেলথ বোমারু বিমানই নিক্ষেপ করতে পারে।বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে অবশ্য কোনও বি-২ বিমান মোতায়েন নেই। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, বোমারু বিমানগুলো মিসৌরির হোয়াইটম্যান বিমান ঘাঁটি থেকেও উড়ে যেতে পারে এই ধরনের মিশনের জন্য। বিমান ও নৌবাহিনী উচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে। পেন্টাগন রয়েছে সজাগ। মধ্যপ্রাচ্যে তাদের বিমানের উপস্থিতি বাড়িয়েছে আমেরিকা। সেখানে নীরবেই অতিরিক্ত যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে তারা।
মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে আমেরিকার ঘাঁটিগুলিতে ট্যাঙ্কার পুনরায় জ্বালানি সরবরাহ করছে বলে জানা গিয়েছে। ওপেন সোর্স ফ্লাইট ট্র্যাকিং ডেটা অনুসারে, মার্কিন রিফুয়েলিং বিমান এবং যুদ্ধবিমানগুলি ব্রিটেন, স্পেন, জার্মানি এবং গ্রিসে অবস্থান করছে। মার্কিন বিমান ইরানের আকাশসীমায় প্রবেশ না করলেও তারা ইরান থেকে আগত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করেছে এবং ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় সহায়তা প্রদান করেছে।

মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ জোর দিয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান তৎপরতা আত্মরক্ষামূলক। তাঁর কথায়, ‘আমাদের জনগণকে নিরাপদ রাখতে আমরা সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছি। সমুদ্রে মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস দ্য সালিভানস, ইউএসএস থমাস হাডনার এবং ইউএসএস আরলে বার্ক ইরানি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করেছে। এই সব মিসাইল ইরানি শহরকে লক্ষ্য করে নিক্ষেপ করা হয়েছিল।’ মার্কিন ডেস্ট্রয়ারগুলি লোহিত সাগর, পশ্চিম ভূমধ্যসাগর এবং বাল্টিক সাগরেও অবস্থান করছে। উল্লেখ্য, আজ, বুধবার ইরান-ইজরায়েল সংঘাত ষষ্ঠ দিনে পা দিয়েছে। এই আবহে গতরাতেও ইরান ও ইজরায়েল নতুন করে এ অপরকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র বিনিময় করেছে। ইরান রাতভর ইজরায়েলি শহরগুলিকে লক্ষ্য করে দুটি পৃথক হামলা চালিয়েছে। তেল আবিবে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এর প্রতিশোধ হিসেবে ইজরায়েল তেহরানের কাছে সামরিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়।