যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ডের (এনটিএসবি) চেয়ারম্যান জেনিফার হোমেন্ডি শুক্রবার বলেছেন, ১২ জুন এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট ১৭১ বিধ্বস্তের ঘটনার তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট থেকে উপসংহার টানার সময় এখনও আসেনি। এনটিএসবি চেয়ারম্যান হোমেন্ডি এয়ার ইন্ডিয়ার দুর্ঘটনার বিষয়ে মিডিয়া রিপোর্টগুলিকে ‘অপরিপক্ক এবং অনুমানমূলক’ বলে অভিহিত করেছেন।
গত ১২ জুন গুজরাটের আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৭ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ২৭০ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় এনটিএসবির সহায়তায় তদন্ত করছে ভারতের এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (এএআইবি)। এএআইবি এবং এয়ার ইন্ডিয়ার সিইও ক্যাম্পবেল উইলসন উভয়ই তদন্ত চলাকালীন জনগণকে জল্পনা এড়াতে অনুরোধ করেছেন। এবার একই সুর এনটিএসবির চেয়ারম্যানের গলায়।
এর আগে তদন্তকারী সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়েছে, ইঞ্জিনের ফুয়েল সুইচ অফ থাকায় বিমানটি ভেঙে পড়েছিল। এরপর এ বিষয়ে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে উঠে আসে। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ককপিটে দুই পাইলটের কথোপকথনে জানা যায়, বিমানের ফুয়েল সুইচ বন্ধ করে দিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিমানের প্রথম অফিসের পাইলট যখন সিনিয়র পাইলটকে জ্বালানি সুইচ কেটে দেওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করেন, তখন ক্যাপ্টেন কোনও উত্তর দেননি এবং চুপ করে থাকেন। এই সময় ফার্স্ট অফিসার পাইলট বেশ অবাক হন।
সম্প্রতি এই দুর্ঘটনা নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে তদন্তকারী সংস্থা। এই প্রতিবেদনে পাইলটদের মধ্যে কথোপকথনের উল্লেখ করা হয়েছিল। তবে কোন পাইলট কী বলেছেন তা এই রিপোর্টে বলা হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন রিপোর্টের পর ফের একবার আলোচনায় উঠে এসেছে আমদাবাদের বিমান দুর্ঘটনার কারণ। এদিকে আমেরিকার সংবাদমাধ্যমের হাতে এই রিপোর্টের বিশদ তথ্য কীভাবে চলে যাচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই আবহে দেখা দিয়েছে বিতর্ক।

এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭ বিমান দুর্ঘটনার পর আসা প্রতিবেদন নিয়ে ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান পাইলটসের (এফআইপি) অসন্তোষের মধ্যেই এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। এই প্রতিবেদনের পর সিনিয়র পাইলট ইচ্ছাকৃতভাবে বিমানের ফুয়েল সুইচ বন্ধ করেছিলেন কি না, তা নিয়ে ফের একবার আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে ভারতীয় তদন্ত সংস্থার রিপোর্টে এখনও এই নিয়ে স্পষ্ট কোনও তথ্য দেওয়া হয়নি।
মার্কিন প্রতিবেদনে বলা হয়, বোয়িং ড্রিমলাইনারের ফার্স্ট অফিসার টেকঅফের কিছুক্ষণ পরই বিস্মিত কণ্ঠে সিনিয়র পাইলটকে জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনি ফুয়েল সুইচ বন্ধ করলেন কেন?’ এ প্রশ্নের কোনও উত্তর দেননি সিনিয়র পাইলট। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জ্বালানির সুইচ বন্ধ করার পর ফার্স্ট অফিসার পাইলট আতঙ্কিত হয়ে পড়েন, তবে সিনিয়র পাইলট শান্ত ছিলেন এবং কোনও সাড়া দেননি। যে দুই পাইলট বিমানটি চালাচ্ছিলেন তাঁরা হলেন সুমিত সাভারওয়াল এবং ক্লাইভ কুন্দর। সুমিত সাভারওয়ালের ১৫,৬৩৮ ঘণ্টা এবং ক্লাইভ কুন্দরের ৩৪০৩ ঘণ্টা বিমান চালানোর অভিজ্ঞতা ছিল।