রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফ থেকে সম্প্রতি একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে জানানো হয়েছিল, চলতি অর্থবর্ষে পশ্চিমবঙ্গের ঋণের পরিমাণ রাজ্যের জিডিপির ৩৮ শতাংশে গিয়ে ঠেকতে পারে। এরই মাঝে ডিএ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশে বিশাল বোঝা চাপতে চলেছে সকারের ওপর। এই আবহে সুপ্রিম নির্দেশ অনুযায়ী ২৫ শতাংশ বকেয়া ডিএ কোথা থেকে জোগাড় করবে রাজ্য সরকার?
সুপ্রিম কোর্ট গতকাল নির্দেশ দিয়ে জানায়, পঞ্চম বেতন কমিশন অনুযায়ী, কর্মীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতার ২৫ শতাংশ দিয়ে দিতে রাজ্য সরকারকে। প্রথমে ৫০ শতাংশ ডিএ দেওয়ার কথা বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। পরে রাজ্যের তরফের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি তাতে আপত্তি জানান। তিনি দাবি করেন, এতে সরকারের কোমর ভেঙে যাবে। এরপর রাজ্য সরকারের পক্ষের যুক্তি শুনে শীর্ষ আদালত জানায়, বকেয়া মহার্ঘভাতার ২৫ শতাংশ দিয়ে দিতে হবে। চার সপ্তাহের মধ্যে সকল কর্মচারীকে এই পরিমাণ ডিএ মিটিয়ে দিতে বলা হয়েছে।
এই আবহে সরকারের সামনে এখন দুটি বিকল্প রয়েছে। এক, সুপ্রিম নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানানো। দুই, বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্প থেকে বরাদ্দ কাটছাঁট করে রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ-র একাংশ মিটিয়ে দেওয়া। রাজ্য সরকার সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন ধরনের ভাতা দিয়ে থাকে। এদিকে দুর্নীতির অভিযোগে একাধিক প্রকল্পে কেন্দ্রের টাকা পাচ্ছে না রাজ্য। তবে ভোটের আগে সেই সব প্রকল্প নিজেদের টাকা দিয়েই রাজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।

অবশ্য ডিএ মামলায় সরকারি কর্মীদের হয়ে সওয়াল করা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য দাবি করেন, বকেয়া ডিএ মেটাতে কোনও প্রকল্প বন্ধ করার দরকার নেই সরকারের। তাঁর যুক্তি, দুর্গাপুজোর সময় ক্লাবগুলোকে অনুদান দেওয়া হচ্ছে বা সরকারি কোষাগার থেকে টাকা নিয়ে মন্দির তৈরি হচ্ছে; এই সব খরচ নিয়ন্ত্রণ করলেই সরকার বকেয়া ডিএ মেটানোর উপায় বেরিয়ে আসবে।
এদিকে এর আগে সুপ্রিম কোর্টের ডিএ নির্দেশিকা নিয়ে রাজ্য সরকারের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের কাছে প্রতিক্রিয়া চাওয়া হয়েছিল। তিনি অবশ্য এই নিয়ে মুখ খোলেননি। তিনি দাবি করেছিলেন, তাঁর হাতে এখনও নির্দেশের কপি এসে পৌঁছায়নি। তিনি এই নিয়ে এখন মুখ খুলতে পারবেন না। তবে একটা বিষয় স্পষ্ট, বিধানসভা ভোটের আগে ডিএ মামলায় জোর ধাক্কা খেয়েছে সরকার। এদিকে মামলা শেষে যদি সরকারকে ১০০ শতাংশ বকেয়া ডিএ মেটাতে হয়, তাহলে সেটা আবার হবে ৪০ হাজার কোটির ধাক্কা।