পঞ্চম বেতন কমিশনের অধীনে বকেয়া ডিএ মেটানোর সময়সীমা প্রায় শেষ হওয়ার পথে। রাজ্য সরকারের হাতে বকেয়া ডিএ মেটানোর জন্য আর মাত্র ২ সপ্তাহের মতো আছে। তবে এরই মাঝে এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা বদলের জন্য ফের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে রাজ্য। এর মধ্যে অবশ্য বকেয়া ডিএ দেওয়ার কাজ কিছুটা করে এগিয়ে রাখছে সরকার। তবে তাও সরকারি কর্মীদের মনে আশঙ্কা রয়েছে, ২৭ জুনের মধ্যে ২৫ শতাংশ বকেয়া ডিএ অ্যাকাউন্টে ঢুকবে তো?
এই আবহে এবার বকেয়া ডিএ প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারকে চরম হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের নেতা ভাস্কর ঘোষ। তিনি দাবি করলেন, আগামী ২৭ জুনের মধ্যে রাজ্য সরকারকে ২৫ শতাংশ ডিএ মেটানো না হলে উত্তাল আন্দোলনে নামবেন সরকারি কর্মীরা। এর আগেও ভাস্কর বাবুরা কলকাতা থেকে দিল্লি পর্যন্ত আন্দোলন করেছেন। অনশনও করেছেন। নবান্নের সামনে পর্যন্ত গিয়ে গলা চড়িয়ে এসেছেন। তবে তাতে সরকার টলেনি।
ভাস্কর ঘোষ বলেন, ‘তৎকালীন বিরোধী নেত্রী (বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী) বলেছিলেন, যে সরকার ডিএ দিতে পারে না, তার ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর, অর্থমন্ত্রী হিসেবে অমিত মিত্রকে নিয়োগ করা হয়, যার উদ্দেশ্য ছিল দক্ষ শ্রমিকদের সস্তা শ্রমিকে পরিণত করা। এর জন্য ডিএ এবং পরবর্তীতে মূল বেতন কমানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল। মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বেতন না বাড়িয়ে সরকারি কর্মচারীদের জীবনযাত্রার মান কমানোর এটি একটি ইচ্ছাকৃত প্রচেষ্টা ছিল।’উল্লেখ্য, ২০২২ সালে যখন প্রথমবার ডিএ মামলা সুপ্রিম কোর্টে উঠেছিল, তখন এই মামলার বিচারপতি ছিলেন জাস্টিন দীনেশ মাহেশ্বরী এবং জাস্টিস ঋষিকেশ রায়। এরপর এই মামলাটি তালিকাভুক্ত হয়েছিল জাস্টিস ঋষিকেশ রায় এবং জাস্টিস দীপঙ্কর দত্তের এজলাসে। আবার ২০২৩ সালের মার্চ মাসে মামলাটি ওঠে জাস্টিস দীনেশ মাহেশ্বরী এবং জাস্টিস সঞ্জয় কুমারের এজলাসে। এরপর ২৮ এপ্রিল, ২০২৩ সালের ডিএ শুনানি শেষবারের মতো উঠেছিল এই এজলাসে। এরপর অবসর নেন জাস্টিস দীনেশ মাহেশ্বরী। তারপর এই মামলার বিচারপতি পদে থাকা জাস্টিস ঋষিকেশ রায় অবসর নেন ২০২৫ সালের ৩১ জানুয়ারি। তবে এবার সুপ্রিম কোর্ট ডিএ মামলায় গতি এসেছে। তাই আশায় বুক বেঁধেছেন সরকারি কর্মীরা।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে সুপ্রিম কোর্টে ঝুলে আছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার কর্মীদের বকেয়া ডিএ মামলা। প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ সংক্রান্ত যে মামলাটি চলছে, সেটা পঞ্চম বেতন কমিশন সংক্রান্ত। ২০১৬ সাল থেকে সেই মামলা চলছে। এই মামলাটি স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনাল, কলকাতা হাইকোর্ট হয়ে সুপ্রিম কোর্টে এসেছে। প্রথমে স্যাটে জয় পেয়েছিল রাজ্য সরকার। তারপর থেকে প্রতিটি ক্ষেত্রে জয় পেয়েছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা।