মঙ্গলবার কুলতলির এক শিক্ষক আত্মহত্যা করেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিজেপি রীতিমতো রাজনীতি শুরু করে দেয়। ওই শিক্ষকের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বিজেপি। আর দাবি করে, ওই শিক্ষক চাকরি হারিয়ে হতাশায় আত্মহত্যা করেছেন। এই নিয়ে তুমুল চর্চা শুরু হয় রাজ্য–রাজনীতিতে। পরে জানা যায়, ওই শিক্ষক ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেলেরই নন। সুতরাং চাকরি হারানোর কোনও বিষয়ই নেই। এটা সম্পূর্ণ ভুয়ো তথ্য। যা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করেছে বিজেপি বলে অভিযোগ। আসল তথ্য ফাঁস করে দেয় জেলা পুলিশ।
এই ঘটনা মুখ পুড়েছে বিজেপির। কারণ একদিকে ভুয়ো পোস্ট করে ধরা পড়েছে তারা। অপরদিকে তৃণমূল কংগ্রেস এখন বিজেপির এই মিথ্যাচার নিয়ে প্রচারে নেমে পড়েছে। যা এককথায় বিজেপির কাছে ব্যুমেরাং হয়েছে। ইতিমধ্যেই মুর্শিদাবাদ–সহ অন্যান্য জায়গায় হিংসার ঘটনা ঘটেছে বলে বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার যেসব ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন সেগুলি পুলিশ ভুয়ো বলে দাবি করেছে। আর তারপরই সেই সব ছবি ডিলিট করে দেন সুকান্ত মজুমদার এক্স হ্যান্ডেল থেকে। এবার আবার কুলতলির শিক্ষক প্রণব নাইয়া আত্মহত্যা করার ঘটনাকে চাকরিহারার তকমা দিয়ে প্রচার করে বিজেপি।
বঙ্গ–বিজেপির সোশ্যাল মিডিয়ার পেজ থেকে ওই ‘আত্মঘাতী’ শিক্ষকের ছবি প্রকাশ করে দাবি করা হয়, কুলতলির মেরিগঞ্জ তেঁতুলবেড়িয়ার বাসিন্দা প্রণব নাইয়া নাকি চাকরি হারানোর জেরেই আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের আইটি সেলের পাশাপাশি ওই অপপ্রচারের পর্দা ফাঁস করে দেয় জেলা পুলিশ। বিজেপির প্রকাশিত মিথ্যা ছবি পোস্ট করা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের আইটি সেল লিখেছে, ২০১২ সালের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রণব নাইয়া যিনি আত্মহননের পথ বেছে নেন তাঁকে ২০১৬ সালের বাতিল এসএসসি প্যানেলের শিক্ষক হিসেবে প্রচার করছে বিজেপি। যদিও বিজেপি এরপর কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি।
এরপর কুলতলির বাসিন্দা তথা শিক্ষক প্রণব নাইয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে বারুইপুর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার পলাশকুমার ঢালি। পুলিশ সুপার বলেন, ‘মৃত শিক্ষক প্রণবকুমার নাইয়া ২০১২ সালের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ২০১৫ সালে মুর্শিদাবাদের বেগমবাড়ির একটি স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন। ২০২২ সালে বদলি হয়ে তিনি জয়নগরের টিএস সনাতন স্কুলে যোগ দেন। এখানেই স্কুলে কর্মরত ছিলেন প্রণব। গত শনিবারও তিনি স্কুলে যান। তাঁর চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়ার কোনও ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে তদন্ত করছে। তবে এটা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো তথ্য দিয়ে গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা এমন ৩০–৪০টি অ্যাকাউন্টের খোঁজ পেয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’