যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু(Bratya Basu) আক্রান্ত হওয়ার ঘটনার পর থেকে রাজ্য–রাজনীতি উত্তাল। এই আবহে ইতিমধ্যেই উপাচার্যদের নিয়ে বৈঠক করেছেন রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোস। সেখানে বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তার মধ্যে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে পরিবেশ এবং পঠনপাঠনের স্বাভাবিক বাতাবরণ এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নেশার দ্রব্য ব্যবহার করার ব্যাপারটি সামনে চলে আসে। আর তাই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস জানান, উক্ত বৈঠকে আলোচিত অন্তত দু’টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি জানাতে চান।
এই তথ্য সামনে আসার পর নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে। কারণ কোন দুটি বিষয় তিনি জানাতে চান সেটা খোলসা করেননি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ঘটনা ঘটেছে তা নিঃসন্দেহে উদ্বেগের বিষয়। কারণ প্রথমে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে অভব্য আচরণ করা হয়েছে। তার উপর নিগ্রহ করা হয়েছে। আর দ্বিতীয় ঘটনা হল, এক ছাত্রের আহত হওয়া শিক্ষামন্ত্রীর গাড়িতে। এই পুরো বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার রাজভবনে বৈঠক হয়। রাজ্যের ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সেখানে হাজির ছিলেন। ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন আরও কয়েকজন। এই বৈঠক শেষ হওয়ার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যপাল বলেন, ‘দু’টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে এখানে আলোচনা হয়েছে। আমি বিষয় দুটি আগে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে জানাতে চাই। আমার মনে হয়, এই বিষয়ে অবিলম্বে প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’
রাজভবনের বৈঠকে যদি আলোচনার এক নম্বরে জায়গা পায় ক্যাম্পাসে নেশার দ্রব্যের ব্যবহার তাহলে দ্বিতীয় বিষয়টি কী? উঠছে প্রশ্ন। কোন দুটি বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলবেন রাজ্যপাল? এই দুটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ হলে তা প্রকাশ্যে আনা হল না কেন? কোন দুটি বিষয় নিয়ে উদ্বেগ রাজ্যপালের? প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ঘটনা ঘটেছে তারপর নিরাপত্তা নিয়েও চিন্তিত রাজ্যপাল বলে জানা গিয়েছে। তবে নিরাপত্তা জোরদার করতে ক্যাম্পাসে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং সিসি ক্যামেরা বসানোর বিষয়েও কর্তৃপক্ষকে ভাবতে বলেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
এই বৈঠক নিয়ে বিতর্ক দেখা গিয়েছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত এই হামলার ঘটনার পর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে আগের থেকে অবস্থা ভাল থাকায় ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকার চেষ্টা করেন। কিন্তু ততক্ষণে রাজভবনে উপাচার্যদের বৈঠক শুরু হয়ে গিয়েছিল। ওই বৈঠকে পরে তাই যোগ দিতে পারেননি ভাস্কর গুপ্ত। এমনটা কেন ঘটল? তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই গোটা বৈঠকে কী আলোচনা হল? রাজ্যপাল সিভি আনন্দকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। তখন রাজ্যপাল স্পষ্ট জানান, বিষয়টি বিচারাধীন। তাই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চান না। এমনকী শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে নিয়েও প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যান রাজ্যপাল।