উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন হচ্ছে না বলে অভিযোগ বিজেপির। তাই উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন করতে হবে। এই দাবি তুলে আজ, রবিবার নয়াদিল্লি রওনা দিলেন বাংলার বিজেপি বিধায়করা। উত্তরবঙ্গের ১০ জন বিজেপি বিধায়ক আজ রাজধানী রওনা হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বিধানসভায় বিজেপির পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক তথা শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। এবার উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন নিয়ে কথা বলতে নয়াদিল্লিতে ১৬টি মন্ত্রকে যাবেন পদ্মবিধায়করা। তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য এতে গুরুত্ব দেয়নি। শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব এই বিজেপি বিধায়কদের দিল্লিযাত্রাকে ‘রাজনৈতিক চমক’ বলে কটাক্ষ করেছেন।
বিজেপি বিধায়করা মুখে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নের কথা বললেও এখন তাঁদের সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়েছে সেখানে। যার জন্যই একের পর এক জায়গায় ফুটেছে ঘাসফুল। এমনকী বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ জন বারলা গেরুয়া সংস্রব ত্যাগ করেছেন। উলটে সমর্থন করছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাই তাঁর মঞ্চে জন বারলাকে দেখা গিয়েছিল। এবার বড় কর্মসূচিতেও দেখা যাবে বলে সূত্রের খবর। উত্তরবঙ্গের নানা জেলা থেকে এখন বিধায়ক, সাংসদ রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের। সুতরাং বিজেপির এই রাজধানী সফর কতটা প্রাসঙ্গিক তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছেই।
২০২৬ সালে বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। হওয়ার কথা। সেদিকে তাকিয়েই এই নয়াদিল্লি সফর বলে মনে করছে তৃণমূল কংগ্রেস। একুশের নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর থেকেই উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার দাবি তুলেছিলেন বিজেপি নেতারা। যদিও তাতে সাড়া দেয়নি উত্তরবঙ্গের মানুষ। তবে এই নয়াদিল্লি যাত্রা করছেন, শঙ্কর ঘোষ ছাড়া আনন্দময় বর্মণ, দুর্গা মুর্মু, শিখা চট্টোপাধ্যায়, বিশাল লামা, সুশীল বর্মণ, মালতি রাভা রায়, কৌশিক রায়, চিন্ময় দেব এবং পুনব হেঙরা। এঁদের মধ্যে বিমানে নয়াদিল্লি যাচ্ছেন শঙ্কর ঘোষ এবং বিশাল লামা। বাকি ৮জন বিধায়ক যাচ্ছেন ট্রেনে।
এই আবহে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার পাহাড় সমস্যার সমাধান নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডেকেছে। আগামী ২ এপ্রিল নর্থব্লকে এই আলোচনা হবে। আজ শিলিগুড়িতে নবনির্বাচিত জেলা সভাপতিদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসে দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তা বলেন, ‘এই আলোচনা কোন রাজনৈতিক আলোচনা নয়। কোন রাজনৈতিক দল এই বৈঠক ডাকেনি। কেন্দ্রীয় সরকার ডেকেছে। নিশ্চয়ই পাহাড় নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কিছু চিন্তাভাবনা করেছে তাই এই আলোচনা।’ আর শঙ্কর ঘোষের বক্তব্য, ‘উত্তরবঙ্গের রাস্তা, রেল, বিমানবন্দরের উন্নয়নে অনেক সাহায্য করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এখন কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, এইমসের মতো হাসপাতালের প্রয়োজন আছে। সেসব নিয়ে কথা বলতে যাচ্ছি। একটা নতুন উত্তরবঙ্গ গড়ে তুলব আমরা।’ পাল্টা গৌতম দেবের কথায়, ‘গত ১০ বছরে কোনও কাজ করেনি উত্তরবঙ্গে। এবারও শূন্য হাতে ফিরবে। রাজনৈতিক চমক ছাড়া কিছু নয়।’