চাকরিটা আজ নেই। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে যোগ্য–অযোগ্যদের একই শাস্তি দেওয়া হয়েছে। চাকরিহারাদের এমনই অভিযোগ। যদিও রাজ্য সরকার কাউকে চাকরি ছেড়ে চলে যেতে বলেনি। বরং নিজ নিজ ক্ষেত্রে কাজ চালিয়ে যেতে বলেছে। সুপ্রিম কোর্টে নতুন করে আবেদন করা হয়েছে। এমনকী যোগ্য–অযোগ্য সকলের জন্যই বেতনের পোর্টাল খোলা হয়েছে। এরপরও এসএসসি দফতরের সামনে গতকাল থেকে অবস্থানে বসেছেন চাকরিহারাদের একাংশ। এখন সেখানেই অনশন শুরু করতে চলেছেন তাঁরা বলে সূত্রের খবর। তবে এটা শুধু চাকরি হারানোর জন্য নয়। বরং ডিআই অফিসে চাকরিহারাদের পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে বলে প্রতিবাদেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যা বাড়তি সমস্যা তৈরি করতে পারে।
এদিকে নিজের জীবন থাকতে কারও চাকরি যেতে দেবেন না বলে আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার জন্য টাস্ক ফোর্স গঠন করেছেন। পৃথক একটি কমিটি গঠনও করেছেন। যাতে চাকরিহারারা আবার তাঁদের চাকরি ফিরে পান। আজ, বৃহস্পতিবার ২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যোগ্য চাকরিহারা শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের নামের তালিকা আর তাঁদের ওএমআরের মিরর ইমেজ প্রকাশের দাবিতে ও কসবায় পুলিশের লাঠিচার্জের প্রতিবাদে এসএসসি দফতরের সামনে অনশনে তাঁরা বসছেন। তবে গোটা বিষয়টি তাঁরা সাংবাদিক বৈঠক করে জানাবেন।
অন্যদিকে চাকরিহারাদের উপর পুলিশের লাঠিচার্জ সঠিক পদক্ষেপ নয় বলে ইতিমধ্যে ঘনিষ্ঠমহলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বার্তা, সকলকে সংযত থাকতে হবে। রাজ্য সরকার আইনি পথেই বিষয়টি ফেরত নিয়ে আসার চেষ্টা করছে। তার জন্য পাঁচজন দুঁদে আইনজীবী ঠিক করা হয়েছে। তবে এসএসসি ২০১৬ প্যানেলের বৈধ চাকরিহারা সমাজ মঞ্চের পক্ষ থেকে সুমন বিশ্বাস বলেন, ‘আগেও বলেছি আমরা আত্মত্যাগের জন্য প্রস্তুত। তাই আমরা লাগাতার অনশন শুরু করতে চলেছি। আমাদের সহযোগিতা করুন।’ গতকাল সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে এসএসসি দফতরে গিয়েছিলেন সুমন বিশ্বাস–সহ অন্যান্যরা।
বিজেপির সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এসএসসি দফতরে এসে চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারের সঙ্গে দেখা করেন। তার পর এসএসসি’কে ওএমআর শিটের মিরর ইমেজ প্রকাশের জন্য দু’দিন সময়সীমা বেঁধে দেন প্রাক্তন বিচারপতি। আর তা না হলে শনিবার দিন বৃহত্তর আন্দোলনে নামা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন। আর আজ সেখানেই অবস্থানে বসে পড়েছেন চাকরিহারাদের একাংশ। এখন তাঁদেরও দাবি, মিরর ইমেজ প্রকাশ করতে হবে। না হলে তাঁরা তাঁদের বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন। এমনকী লাগাতার অনশনও করবেন। যদিও পুলিশের লাঠিচার্জ নিয়ে কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা বলেন, ‘আক্রান্ত হওয়ার পরই পুলিশ হালকা বলপ্রয়োগ করেছে। তবে লাঠিচার্জ কাম্য নয়।’ রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থও শিক্ষকদের সংযত হতে পরামর্শ দিয়েছেন।