ওয়াকফ নিয়ে ফিরহাদের বিরুদ্ধে নয়াদিল্লিকে রিপোর্ট কেন্দ্রীয় সংস্থার

Spread the love

ওয়াকফ বিল এখন আইনে পরিণত হয়েছে গোটা দেশে। ওই আইন নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে। কিন্তু বাংলার ওয়াকফ সম্পত্তি ‘জবরদখল’ হয়েছে বলে এবার অভিযোগ উঠল। এই অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠাল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। আর ওই রিপোর্টে কমপক্ষে চারজন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা–নেত্রীর নাম আছে বলে সূত্রের খবর। রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, এক সাংসদ এবং কলকাতা পুরসভার এক কাউন্সিলরের নাম আছে বলে সূত্রের খবর। প্রয়াত এক বিধায়কের নামও আছে বলে জানা যাচ্ছে। নয়াদিল্লিকে যে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে তাতে ওয়াকফ সম্পত্তি ‘ব্যক্তিগত স্বার্থে জবরদখল’ এবং ‘অবৈধ পথে হস্তান্তর’ করার তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এই রিপোর্ট অনেক আগেই নয়াদিল্লিতে পাঠানো হয়েছিল বলে আইবি দফতর সূত্রে খবর।

এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই জোর চর্চা শুরু হয়েছে মহানগরে। নয়া ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে এখন বাংলাজুড়ে প্রতিবাদ হচ্ছে। মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর–সুতিতে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা গিয়েছে। রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল। এমনকী ওয়াকফ আইন বাংলায় কার্যকরী হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী তথা মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এই আবহে ওয়াকফ সম্পত্তি জবরদখল করার অভিযোগে গোয়েন্দা রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে নয়াদিল্লিতে। ওয়াকফ বোর্ডের সদস্য নাসিরুদ্দিন আহমেদের কথা রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে। তিনি নদিয়ার কালীগঞ্জের বিধায়ক ছিলেন। সদ্য প্রয়াত হন। তাঁর বিরুদ্ধে ‘জবরদখল’ করার অভিযোগ রিপোর্টে লিখেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। আর ওই রিপোর্টে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভা সাংসদ নাদিমুল হকের নামও আছে। যা বেশ চাপের কথা।

এইসব নামের মাঝে আরও দুটি নাম আছে। এক, কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। দুই, কলকাতা পুরসভার ৬৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলর শাম্মি জাহান বেগম। ফিরহাদ হাকিম রাজ্য মন্ত্রিসভার সিনিয়র মন্ত্রী। তাঁর নামে এমন অভিযোগ ওঠায় সরগরম হয়ে উঠেছে রাজ্য–রাজনীতি। মহাবীরতলা মসজিদ থেকে আলিপুর এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত জোহুরা বিবি ওয়াকফ এস্টেটের ৩৫ বিঘা জমির মধ্যে ৫ বিঘার বেশি জমি জবরদখল করেছেন ফিরহাদ হাকিম বলে লেখা হয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা রিপোর্টে। কাউন্সিলর শাম্মি জাহান বেগম হাজরা রোডে টিপু সুলতান গোরস্থানে জমি জবরদখল করে রেখেছেন বলে ওই রিপোর্টে লেখা হয়েছে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা রিপোর্ট কি সত্য?‌ উঠছে প্রশ্ন।

মেয়র ফিরহাদ হাকিম এই রিপোর্টের কথা জানেন। তবে এসব অভিযোগ সত্য নয় বলেই তাঁর দাবি। এই বিষয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‌ওয়াকফ বিলের বিরোধিতা করে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় রেজুলিউশন আনা হয়। তারপরও সেই ওয়াকফ বিল পাশ হয়। যেটা অন্যায়। সংবিধানে লেখা আছে সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি তাদের হাতেই থাকবে। তাই এটা অসাংবিধানিকও। বিজেপি এটা করেছে হিন্দু ভোট এবং মুসলমান ভোটের জন্য। এটার বিরোধিতা আমরা করব। তাই বাংলায় ওই আইন কার্যকর হবে না। আর কেন্দ্রীয় রিপোর্টে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এই সব অভিযোগের কোনও তথ্যপ্রমাণ দেখাতে পারবে না কেন্দ্রীয় সংস্থা।’‌

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *