ওশো-র সঙ্গে ছিল না ‘যৌন সম্পর্ক’

Spread the love

মা আনন্দ শীলা ওরফে শীলা আম্বালাল প্যাটেল ওরফে শীলা বার্নস্টিল… একই মানুষের নানান নাম। তিনি ওশোর দ্বারা অনুপ্রাণিত রজনীশ আন্দোলনের মুখপাত্র ছিলেন। ইন্দো-সুইস এই মহিলা ওশোর সচিব হিসেবে কাজ করেছিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগনের ওয়াসকো কাউন্টিতে অবস্থিত রজনীশপুরম আশ্রম পরিচালনা করতেন। আর এই মহিলাকে নিয়েই বায়োপিক বানানোর ইচ্ছেপ্রকাশ করেছিলেন বলিউডের চলচ্চিত্র নির্মাতা শাকুন বাত্রা। যিনি কাপুর অ্যান্ড সন্সের মতো সিনেমা বানিয়েছেন। তিনিই মা আনন্দ শীলার জীবনী নিয়ে একটি বলিউড বায়োপিক তৈরির কথা ভেবেছিলেন।

এমনকী, এই আনন্দ শীলা নিজেই জানিয়েছিলেন যে, তাঁর চরিত্রের জন্য আলিয়া ভাটকে পছন্দ তাঁর। কিন্তু একাধিক কারণে এগোয়নি এই ছবির কাজ। চলুন জেনে নেওয়া যাক এই মা আনন্দ শীলা সম্পর্কে বিস্তারে-

মা আনন্দ শীলা কে?

বর্তমান প্রজন্ম ২০১৮ সাল পর্যন্ত ‘মা আনন্দ শীলা’কে চিনতেন না, যতক্ষণ না নেটফ্লিক্স ওশোর জীবনের উপর ভিত্তি করে ‘ওয়াইল্ড ওয়াইল্ড কান্ট্রি’ নামে একটি তথ্যচিত্র আসে। এই তথ্যচিত্রের কারণে মা আনন্দ শীলার নাম আলোচনায় আসে।

এই তথ্যচিত্রের কারণে মা আনন্দ শীলার নাম আলোচনায় আসে। ওয়াইল্ড ওয়াইল্ড কান্ট্রির জনপ্রিয়তার পর, প্ল্যাটফর্মটি আনন্দ শীলার উপর ভিত্তি করে আরেকটি তথ্যচিত্র ‘সার্চিং ফর শীলা’ প্রকাশ করে। এই তথ্যচিত্রটি রচনা ও পরিচালনা করেছেন শকুন বাত্রা।

আনন্দ শীলার সঙ্গে ওশোর সম্পর্ক:

ভারতে জন্ম, নাম শীলা আম্বালা পাটেল। ১৮ বছর বয়সে উচ্চশিক্ষার জন্য আমেরিকায় গিয়েছিলেন শীলা। সেখানেই বিয়ে করেন এক বিদেশীকে। তারপর ২৩ বছর যখন বয়স, আমেরিকান স্বামীকে নিয়ে দেশে ফেরেন শীলা। আর তখনই সংস্পর্শে আসেন আধ্যাত্মিক গুরু ওশো রজনীশের। ওশোর থেকে দীক্ষা নিয়ে, তাঁর আশ্রমে থাকতে শুরু করেন। নাম হয় মা আনন্দ শীলা। আর কয়েক বছরের মধ্যে হয়ে ওঠেন, ওশোর সবচেয়ে কাছের শিষ্যা।

হিউম্যানস অফ হিউম্যানিটি অনুষ্ঠানে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মা আনন্দ শীলা মেনে নিয়েছেন, তাঁর ও ওশোর মধ্যেকার পারস্পরিক স্নেহের কথা। যদিও স্পষ্ট করে বলেছেন যে, তাদের সম্পর্কে কোনো যৌনতা ছিল না, তাঁরা একসঙ্গে বসে কখনো কবিতা নিয়ে আলোচনা করতেন, আবার কখনো দেখতেন উমরাও জানের মতো সিনেমা।

শীলার কারাবাস

ওশোর তত্ত্বাবধায়ক এবং কথিত বান্ধবীকে বিষ প্রয়োগের অভিযোগে অভিযুক্ত মা আনন্দ শীলা জড়ান বড় বিতর্কে। এরপর তিনি ছেড়ে দেন আশ্রম। ওশো নিজেই তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলিতে সম্মতি দিয়েছিলেন। তবে তাতেও ওশোর প্রতি নিজের ভালোবাসা এবং কৃতজ্ঞতা বজায় রেখেছিলেন শীলা।

১৯৮৪ সালে, ওরেগনের দ্য ডালেসে স্থানীয় ১০টি রেস্তোরাঁয় খাবার খাওয়ার সময় ৭৫১ জনের বিষক্রিয়া হয়। আর তদন্তের পর জানা যায় যে, এটি স্থানীয় নির্বাচনকে প্রভাবিত করার লক্ষ্যে মা আনন্দ শীলার নেতৃত্বে ভগবান শ্রী রজনীশের অনুসারীদের করা একটি ‘জৈব সন্ত্রাস’। এই ঘটনাটিকে মার্কিন ইতিহাসের বৃহত্তম জৈব সন্ত্রাসবাদী আক্রমণ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। দোষি সাব্যস্ত হওয়ার পর, ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল শীলাকে। তবে তিনি নিজের ভালো আচরণের কারণে ৩ বছর পরেই মুক্তি পেয়ে যান।

শীলার ৩টি বিয়ে

একাধিক সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন শীলা। তিনি প্রথমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মার্ক হ্যারিস সিলভারম্যানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন, এরপর ১৯৭২ সালে তিনি ভারতে ফিরে আসেন। ১৯৮০ সালে সিলভারম্যানের মৃত্যুর পর, তিনি ওশোর আরেক অনুসারী জন শেলফারকে বিয়ে করেন। শেলফারের মৃত্যুর পর, তিনি উরস বার্নস্টিলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন, যিনি ১৯৯২ সালে এইডসে মারা যান। ১৯৭৯ সালে, শীলা তাঁর দত্তক কন্যা অনুজার সম্মানে তাঁর ব্যবসার নাম রাখেন অনুজা ইমপেক্স।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *