বড়সড় দুর্ঘটনার কবলে পড়েও কোনও মতে প্রাণে রক্ষা পেলেন কলকাতার একটি কলেজের আট পড়ুয়া এবং তাঁদের গাড়ির চালক। পাহাড়ি রাস্তার উপর আচমকা গাছ ভেঙে পড়ায় ওই ন’জন-সহ একটি ছোট যাত্রীবাহী গাড়ি সোজা খাদে পড়ে যায়। তবে, শেষ পাওয়া খবর অনুসারে – এই দুর্ঘটনায় কারও মৃত্যু হয়নি। কিন্তু, সকলেই কম বেশি আহত হয়েছেন।
সংবাদমাধ্যমের হাতে আসা তথ্য অনুসারে, ভয়াবহ এই দুর্ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল, ২০২৫) দুপুর ২টো নাগাদ। সিকিম থেকে শিলিগুড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে পড়ুয়াদের ওই গাড়িটি।
তথ্য বলছে, ওই আটজন পড়ুয়া কলকাতা নেতাজি কলেজের পড়াশোনা করেন। তাঁরা ওই কলেজের ভূগোল বিভাগের পড়ুয়া। তাঁরা সিকিমের পেলিংয়ে গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই ফিরছিলেন তাঁরা। একটি এসইউভি গাড়িতে ওই আটজন পড়ুয়া এবং তাঁদের গাড়ির চালক ছিলেন।
জানা গিয়েছে, সিকিম থেকে শিলিগুড়ি নামার পথে লেপচাঝোরার কাছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে, মূল রাস্তার উপর হঠাৎই একটি গাছ ভেঙে পড়ে। আচমকা এই ঘটনায় গাড়ির উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন চালক। তবে সূত্রের দাবি, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত গাড়িটি রাস্তার উপরেই থামানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু, প্রাণপণ স্টিয়ারিং ঘুরিয়েও চাকা খাদের কিনারা থেকে সরাতে পারেননি চালক। ফলত, গাড়ির চাকা রাস্তা থেকে নেমে খাদের দিকে চলে যায়। এবং তারপরই ঢাল বেয়ে নীচে গড়িয়ে পড়ে!
এই ঘটনায় গাড়িতে সওয়ার ন’জনই কম বেশি আহত হন। তবে, কারও প্রাণ যায়নি। দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই উদ্ধারকাজ শুরু করা হয়। আহতদের সকলকেই দুর্ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে কালিম্পং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শেষ পাওয়া খবর অনুসারে – সেখানেই আহতদের চিকিৎসা চলছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত সকলেরই অবস্থা স্থিতিশীল এবং আপাতত তাঁরা বিপন্মুক্ত।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবারের ওই দুর্ঘটনার খবর পৌঁছতেই দ্রুততার সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান স্থানীয় কালিম্পং থানার পুলিশকর্মী ও আধিকারিকরা। মূলত স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় পুলিশের তরফে উদ্ধারকাজ শুরু করা হয়।
অন্যদিকে, বন বিভাগের কর্মীদেরও খবর দেওয়া হয়। কারণ, বিরাট আকারের ওই গাছটি যেভাবে ভেঙে পড়েছিল, তাতে আড়াআড়িভাবে রাস্তা পুরো আটকে যায়। এর ফলে দীর্ঘক্ষণ ওই পথে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর বনকর্মীরা এসে গাছের ভেঙে পড়া অংশটি কেটে, সরিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করার কাজ শুরু করেন। সেই কাজ পুরোপুরি মিটতে বেশ খানিকটা সময় লেগে যায়। ততক্ষণ দুর্ঘটনাস্থলের দুই দিকে জাতীয় সড়কের উপর গাড়ির লম্বা সারি দাঁড়িয়ে পড়ে। পরে অবশ্য পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে যায়।