ভাঙড়ে কৃষককে চাষের জমিতে ফেলে গণপিটুনি দিয়ে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই চাষের জমি থেকেই উদ্ধার হয়েছে কৃষকের রক্তাক্ত মৃতদেহ। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। পোলেরহাট থানার পুলিশ ওই কৃষকের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। তারপর তা ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে দিয়েছে। এই কৃষক হত্যার ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশের কাছে ওই কৃষক পরিবার অভিযোগ করেছে যে, এটি অস্বাভাবিক মৃত্যু। পিটিয়ে খুন করা হয়েছে কৃষককে।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত ওই কৃষকের নাম নাম বাবলু মোল্লা। ভাঙড় ২ নম্বর ব্লকের পোলেরহাট থানার পাইকান এলাকায় বাবলুকে দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। রাত ১টা নাগাদ জমির লঙ্কা খেত থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় কৃষকের দেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। ওই কৃষক বাবলুর সঙ্গে প্রতিবেশী কয়েকটি পরিবারের জমি নিয়ে বিবাদ ছিল। সেখান থেকে এই খুনের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। স্থানীয় বাসিন্দা সেলিম মোল্লা জানান, পারিবারিক বিবাদের জেরেই এই খুন। বাবলু জমি বিক্রি করছিলেন না এবং কাউকে তা করতেও দিচ্ছিলেন না। এই নিয়ে পরিবার এবং প্রতিবেশীদের মধ্যে গোলমাল চলছিল। ভয় দেখিয়ে যখন কাজ হল না তখন পিটিয়ে মারা হল।
স্থানীয় সূত্রে খবর, যারা কৃষক বাবলুকে পিটিয়ে মেরেছে তারা প্রমাণ লোপাট করতেই এই কাজ করেছে। যাতে কেউ জানতে না পারে আসলে জমির বিবাদ ছিল। রবিবার ওই কৃষক হত্যার কথা শুনে ঘটনাস্থলে পৌঁছন ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লা। তিনি পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে পুলিশকে উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে বলেছেন। দোষীদের শাস্তির দাবি করেছেন। আর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শওকত বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। বাবলু আমাদের দলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। আমরা অত্যন্ত শোকাহত। এই খুনের সঙ্গে কে বা কারা জড়িত সেটা অবিলম্বে খুঁজে বের করা হোক এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক দোষীকে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।’
এই খুনের সঙ্গে রাজনীতির যোগ আছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অত রাতে বাবলু কেন জমিতে গিয়েছিলেন? সেটা খোঁজ করছে পুলিশ। প্রতিবেশী এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছে পুলিশ। তবে রাজনীতির যোগ নিয়ে শওকত মোল্লার বক্তব্য, ‘আমরা বিজেপি করি না যে সব কিছুতেই খুন বলে চালিয়ে দেবো। আমরা এমন কাজে বিশ্বাস করি না। যতক্ষণ না তদন্ত হচ্ছে, প্রমাণ হচ্ছে কিছু, ততক্ষণ এটাকে রাজনৈতিক খুন বা রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে বলা যায় না। প্রশাসনের কাছে আবেদন সঠিক তদন্ত হোক। কলকাতা পুলিশকে ধন্যবাদ জানাব পুলিশ কুকুর থেকে শুরু করে উচ্চ পদস্থ অফিসাররা এসেছিলেন। এই হত্যাকাণ্ডের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চলছে।’